2.9 C
Toronto
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

ইউটিউব-টিকটকে ঘুমের লাইভ ভিডিও দিয়ে বিপুল অর্থ আয় করেন তাঁরা

ইউটিউব-টিকটকে ঘুমের লাইভ ভিডিও দিয়ে বিপুল অর্থ আয় করেন তাঁরা - the Bengali Times
জনপ্রিয় স্ট্রিমার কাই সেনাট অ্যামোরান্থ ও স্ট্যানলিমভ ছবি সংগৃহীত

বেশির ভাগ মানুষ ঘুমের মধ্যে আলুথালু হয়ে যান। এমন অগোছালো এলোমেলো অন্দরের দৃশ্য সাধারণত কেউ প্রকাশ করতে চান না। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ডের যুগে এখন সবই ‘কনটেন্ট’! তুচ্ছ, আপত্তিকর—এমনকি লজ্জার ঘটনাও এখন ভাইরাল কনটেন্ট হয়ে উঠতে পারে। এতে রাতারাতি সেলিব্রেটি হওয়ার সুযোগ তো আছেই, সঙ্গে আছে মোটা অর্থযোগ।

ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব, টিকটক এবং গেম স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচ এখন তথাকথিত ‘স্লিপ স্ট্রিমার’ দিয়ে ভরে যাচ্ছে। এরা নিজেদের ঘুমের লাইভ ফুটেজ সম্প্রচার করে।

- Advertisement -

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত কাই সেনাট নামে এক যুবক রয়েছেন এই ট্রেন্ডের গোড়ায়। তিনি গত মার্চে একটি মাসব্যাপী ঘুমের স্ট্রিমিং করে হাজার হাজার ডলার কামিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত স্ট্রিমার অ্যামোরান্থ গত জুনে ‘দ্য আইসড কফি আওয়ার’ শীর্ষ পডকাস্টে দাবি করেন, একটি ঘুমের স্ট্রিমিং থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন তিনি।

আরও পড়ুন :: গাছপালায় ভরে উঠবে থর মরুভূমি, কেন হবে এমনটা

এই ঘুমের ভিডিও মানুষ কেন দেখে? এর একটি সহজ উত্তর হলো—দর্শকেরা যখন ঘুমের ভিডিওগুলো দেখেন তখন তাঁদের মধ্যেও একটি দলগত অনুভূতি তৈরি হয়। ভিডিওর ব্যক্তির সঙ্গে দর্শকও ঘুমিয়ে পড়ার তাগিদ বোধ করেন। সেই সঙ্গে এটি একটি বিনোদনেরও উৎস বটে।

ধারণাটি উদ্ভট শোনাতে পারে, তবে এটা কিন্তু নতুন নয়—২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে রিয়েলিটি শো বিগ ব্রাদার বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দেখা শোগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। এই শোর অংশগ্রহণকারীরা ২৪ ঘণ্টা একটি বাড়িতে থাকেন। রাতে তাঁরা একসঙ্গে ঘুমান। পুরো বিষয়টিই লাইভ স্ট্রিম করা হয়। সেটি পরবর্তীকালে অনলাইনেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারি ফুটবলার ডেভিড বেকহ্যামের ঘুমের এক ঘণ্টার ভিডিও সম্প্রচার করেছিল।

ইউটিউব-টিকটকে ঘুমের লাইভ ভিডিও দিয়ে বিপুল অর্থ আয় করেন তাঁরা - the Bengali Times
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আয় করেন স্ট্যানলি ছবি সংগৃহীত

আয় হয় কীভাবে?
ঘুমের স্ট্রিমিংগুলো অবশ্য দিন দিন আরও বিচিত্র ও অদ্ভুত হতে শুরু করেছে। এসব ভিডিওতে বিজ্ঞাপন থেকে আয় তো রয়েছেই—সেই সঙ্গে প্রথমে দর্শকেরা স্ট্রিমারদের ঘুমানোর জন্য টাকা দিতেন। এখন স্ট্রিমারকে জাগিয়ে রাখার জন্য দর্শকেরা টাকা দিচ্ছেন। ঘুমন্ত স্ট্রিমারকে বিরক্ত করার জন্য টাকা দিয়ে উচ্চ শব্দ, সাইরেন বাজানো, ঝিকমিক করা আলো জ্বালাতে পারেন দর্শকেরা।

এই ভিডিওগুলো এখন একটি লাইভ-অ্যাকশন ভিডিও গেমের মতো, যেখানে স্ট্রিমার ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন আর খেলোয়াড়েরা বা দর্শকেরা তাঁদের জাগিয়ে রাখার জন্য যা যা করার তা করেন।

ট্রেন্ডটি প্রথম শুরু হয় টিকটকে। জ্যাকি বোহেম এবং স্ট্যানলি ওরফে স্ট্যানলিমভের মতো ‘স্লিপফ্লুয়েন্সার’ (ঘুমের মোটিভেশন দেন তাঁরা) বলেন, বাসাভাড়ার টাকা জোগাড় করতে তাঁরা মাঝেমধ্যে ঘুমের স্ট্রিমিং করেন।

ঘুমের স্ট্রিমিংগুলোতে দর্শকেরা বিশেষ ফিচার পেতে চাইলে সে জন্য টাকা দিতে হয়। যেমন, ঘুমন্ত স্ট্যানলিমভকে তাঁর হাতে পরা ব্রেসলেটের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক দিতে চাইলে দর্শককে ৯৫ ডলার খরচ করতে হবে। আর ঝিকমিক করা আলো জ্বালানোর জন্য ১২ ডলার এবং উজ্জ্বল আলো দিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিতে চাইলে ২৪ ডলার খরচ করতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এ ধরনের স্ট্রিমিং উপকারি হতে পারে। সেই সঙ্গে যিনি পারফর্ম করছেন, তাঁর যদি অর্থ উপার্জন হয় তাতে সমস্যা কী? তবে দু-তিন সপ্তাহ পরপর একবার করে এটি করা যেতে পারে। কিন্তু শুধু অর্থ উপার্জন বা জনপ্রিয়তার ফাঁদে পড়ে অতিরিক্ত করাটা স্ট্রিমার বা দর্শক কারও জন্যই ভালো হবে না।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles