
এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো টরন্টো সেকেন্ডারি স্কুলের সাবেক এক শিক্ষক কারা কারা মেয়াদ এড়াতে পেরেছেন। সাজা ঘোষণার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, সাবেক ওই শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২ হাজার পৃষ্ঠার সমপরিমাণ টেক্সট মেসেজ বিনিময় করেন।
অন্টারিওর সাবেক হাইস্কুল শিক্ষক কলিন রামসে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। একটা সময় এ সম্পর্ক যৌন নিপীড়নের পর্যায়ে চলে যায়। যৌন নিপীড়নের উদ্দেশে ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কের জন্য দোষ স্বীকার করেন।
এর সাজা হয়ে থাকে সাধারণত ছয় মাসের কারাদ-। গত মাসে সাজার শুনানিতে অন্টারিও কোর্ট অব জাস্টিসের বিচারক জন ম্যাকইনেস রামসেকে গৃহবন্দির সাজা পূরণ করার আদেশ দেন। এর মেয়াদ একদিন কম দুই বছর।
ম্যাকইনেস তার সিদ্ধান্তে লিখেছেন, যে তথ্য-উপাত্ত পেশ করা হয়েছে তাতে করে মি. রামসে যে সত্যি সত্যিই অনুতপ্ত সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হয়েছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে টরন্টো ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ডের (টিডিএসবি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আদালতের বিষয় হওয়ায় এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি তারা।
রামসের গ্রেপ্তারের সময় বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল এবং তিনি আর সিটির শিক্ষক নন। আদালতে উপস্থাপিত নথিতে এমনটাই জানা গেছে।
ওই ঘটনা যখন ঘটেতখন রামসের বয়স ছিল প্রায় ৪৫ বছর এবং স্থানীয় একটি হাইস্কুলে গ্রেড ১১ ও গ্রেড ১২ এ ফটোগ্রাফি ও ইয়ারবুক ক্লাসে পড়াতেন। ভুক্তভোগীর সুরক্ষায় স্কুলে নামটি এখানে উহ্য রাখা হচ্ছে।
আদালতে উপস্থাপিত নথি অনুযায়ী, রামসের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর যখন প্রথম সাক্ষাৎ হয় তখন সে ছিল দশম গ্রেডের শিক্ষার্থী। সে ও তার সহপাঠীরা প্রায় সময়ই রামসের ক্লাসে সময় কাটাত। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওই শিক্ষার্থী রামসের ইয়ারবুক ক্লাসে ভর্তি হয় এবং এর পরপরই শিক্ষকের ফোন নম্বর পেয়ে যায়, যাতে করে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে সে প্রশ্ন করতে পারে। ডিসেম্বরে তারা স্কুল সময়েল বাইরে কফি খেতে যান। জানুয়ারিতে তাার তিন থেকে চারবার সাক্ষাৎ করেন। এটা কাউকে না জানানোর জন্য শিক্ষার্থীকে বলেন রামসে। এরপর থেকে এই সাক্ষাৎ চলতে থাকে। ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে এই দেখা সাক্ষাৎ সপ্তাহে এক থেকে দুইবারে গড়ায়। প্রায়ি সময়ই তারা রেস্তোরাঁয় খেতে যেতেন। এই সময় থেকে ওই শিক্ষক রেস্তোরাঁয় খাওয়ার সময় শিক্ষার্থীর ওপর হাত রাখতে শুরু করেন।
পুরো শীত ও বসন্তজুড়ে দুজনের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান চলতে থাকে। কথোপকথনের এক পর্যায়ে রামসে শিক্ষার্থীকে ছবি পাঠিয়ে তার যৌন পছন্দ জানতে চান। শিক্ষক তাকে বিভিন্ন ধরনের উপহারও পাঠাতে থাকেন। এরপর বারবারই তাকে আবেদনময়ী বলতে থাকেন।
২০২০ সালে জুনের মাঝামাঝি সময়ে এসে ওই শিক্ষার্থী রামসের টেক্সট মেসেজের উত্তর দেওয়া ও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেয়। বিশ^স্ত একজনের কাছে শিক্ষকের আচরণের বিষয়টি জানায়ও। সব মিলিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর দুই হাজার পৃষ্ঠার টেক্সট মেসেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
এ ঘটনায় টরন্টো পুলিশ সার্ভিস (টিপিএস) ও চিলড্রেন’স এইড সোসাইটি অব টরন্টো যৌথ তদন্ত শুরু করে এবং ২০২০ সালের ১০ জুন রামসেকে হেফাজতে নেয়। পরে অবশ্য মুচলেকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।