
টঙ্গীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির পর ডাকাতরা বিদেশি গৃহবধূকে প্রশ্ন করে, হোয়ার আর ইউ ফ্রম! গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে (রাত ৩টা) টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার মুদাফার মাদরাসা বাজার এলাকার মুদাফা পশ্চিমপাড়ার ব্যবসায়ী সেলিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সদ্য বিদেশ থেকে বেড়াতে আসা সেলিমের শ্যালক প্রবাসী তপু জানান, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৩টায় ১০-১২ জনের ডাকাতদল বাড়ির বারান্দার গ্রিল কেটে ও দরজার লক ভেঙে দুলাভাই সেলিমের মায়ের রুমে প্রবেশ করে। পরে দুলাভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে ভাগ্নির মেয়ের রুমে প্রবেশ করে, পরে ভাগ্নিকে নিয়ে আমার রুমে প্রবেশ করে।
তপু জানান, আমার ও মালয়েশিয়া থেকে বেড়াতে আসা আমার স্ত্রীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বাসার আসবাবপত্র তছনছ করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে।
এ সময় নগদ ১০-১১ লাখ টাকা ও প্রায় ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে।
তপু আরো জানান, গত মাসে আমার স্ত্রী হেমা ও তার পরিবারের লোকজন বাংলাদেশে আসে। পরে এখানেই ধুমধাম করে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান করি। যেহেতু প্রেমের টানে আমার স্ত্রী বাংলাদেশে আসে, তাই সবাই জানে আমাদের বিয়ের বিষয়ে।
তপু জানান, ডাকাতদল আমার রুমে প্রবেশ করে আমার চোখ বেঁধে ফেলে ও আমার স্ত্রীকে স্বর্ণালংকারের কথা জিজ্ঞেস করে। ও বাংলা বোঝে না। আমি ডাকাতদলকে বললে, তাদের এক সদস্য আমার স্ত্রী হেমাকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করে ‘হোয়ার আর ইউ ফ্রম’।
বাড়ির মালিক সেলিম জানান, গভীর রাতে বাড়িতে গ্রিল কেটে প্রবেশ করে, ঘরের একেক সদস্যকে নিয়ে অন্যজনের রুমে প্রবেশ করে।
ফলে, আমরা কেউ বুঝতে পারিনি ডাকাতদল আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করেছে। এভাবে ঘরের প্রত্যেক রুমেই তারা প্রবেশ করে তাণ্ডব চলায়।
সেলিম জানান, ডাকাতদলের সর্দারকে অপর সদস্যরা মাস্টার বলে ডাকে। আমাদের সব কিছু লুট করে নিয়ে শেষে সবাইকে লাইন ধরে দাঁড় করায় ডাকাতদলের সর্দার। পরে নিজেদের লোকদের সবার শরীর সার্চ করে।
পরে ঘরের ফ্রিজে থাকা খাবার ও মিষ্টি খেয়ে যায়। শেষে বাড়ির মেইন গেটের চাবি চেয়ে সবাই চলে যায়। আমাদের সবার মোবাইল ফোন নিয়ে বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেয়। পরে ছাড়া পেয়ে আমরা সেগুলো উদ্ধার করি।
প্রবাসী তপু জানান, ঘটনায় আমি ও আমার প্রবাসী স্ত্রীসহ পরিবারের সবাই আঙ্কিত। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত ডাকাতদলকে গ্রেপ্তার করে আমাদের লুট হওয়া জিনিসপত্র ফেরত চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
জিএমপির অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান
বলেন, ঘটনা সত্য। তদন্ত করেছি। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।