
অনেকে বলেন-কিসের আলোকিত মানুষ! অথচ সায়ীদ ভাই জগৎখ্যাত আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। করেই চলেছেন আলোকিত মানুষ। ৭০ দশকে চট্টগ্রাম থেকে যখন ঢাকায় নাজিল হলাম তখন গল্প লিখি। আবদুল মান্নান সৈয়দ আমার গল্প পছন্দ করতেন। তিনি নিয়ে গেলেন সায়ীদ ভাইয়ের কাছে। তখন তিনি ঢাকা কলেজে পড়ান আর সাহিত্যের সিরিয়াস ত্রৈমাসিক ‘কন্ঠস্বর’ প্রকাশ ও সম্পাদনা করেন। যে পত্রিকার বিজ্ঞাপন কালেকশানের কাজে নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় ডেকে এনে সাইকেল কিনে দিয়ে ছিলেন তিনি আজকের কবি নির্মলেন্দু গুণকে। পর-পর আমার গল্প কন্ঠস্বরে ছাপা হতে একজন ভালো গল্পকার হিসেবে একটু নাম হলো।
গদ্যকার হিসেবে কদর ও বাড়লো। আরো পরে আমার হাত মুঠি করে ধরে রিক্সায় করে তোপখানা রোডে বিটপী বিজ্ঞাপন কোম্পানীতে নিয়ে গেলেন রামেন্দু দা জগৎখ্যাত নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারের কাছে চকরীর জন্যে। আজ যদি আপনারা মনে করেন একটি জোনাক পোকার মত আলো আছে আমার তা এই আলোকিত মানুষ সায়ীদ ভাইয়ের দেয়া। গত শুক্রবারে চট্টগ্রাম থেকে মায়ের কবর দেখে ভরদুপুরে ঢাকায় এসে নামলাম। সেই সন্ধ্যায় গ্যালারী চিত্রকে বরণ্য শিল্পী সৈয়দ জাহাজ্ঞীরের স্মরণ সভায় যাবো।
প্রিয় তাপসকে ছুটির দিনে বাসা থেকে ডাকিয়ে তার অফিস এ্যাড হেড কোয়ার্টার খুলিয়ে বসে আয়েশ করে কফি বিস্কুট খাচ্ছিলাম। ফোন এলো ছড়াকার আমীরুল ইসলামর –কই আছেন ইকবাল ভাই? আজ স্যারের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছর কি জমজমাট বর্ষপূর্তি উৎসব চলছে!চলে আসেন! ছিলাম বাংলা মটর মোড়েই শুধু রাস্তার এপর-ওপার। দিলাম ছুট কেন্দ্রে। আলপনায় দেয়াল পথ সব রঙিন,হাজারো তরুণপ্রাণের মেলা। আটতলা কেন্দ্র লোকে টইটুম্বুর। ৬তলায় সায়ীদ ভাই দরবার সাজিয়ে বসে আছেন।
কত কালের পর দেখা হলো সায়ীদ ভাইয়ের সাথে। ভূবন ভাসানো তার হাসিটি তেমনি আছে। কে বলে তাঁর বয়স হয়েছে! উনিতো আলোয় ভরা মানুষ ছবিতে দেখুন ওনার পাশে আমাকে কতটা বৃদ্ধ লাগছে। দীর্ঘজীবী হোন সায়ীদ ভাই । আমাদের একমাত্র জগৎ আলোকিত আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।