10.1 C
Toronto
মঙ্গলবার, মার্চ ১৮, ২০২৫

লামিশার মৃত্যুর আগের লেখা কাঁদাচ্ছে সবাইকে

লামিশার মৃত্যুর আগের লেখা কাঁদাচ্ছে সবাইকে - the Bengali Times
লামিশা ইসলাম

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী লামিশা ইসলাম। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে তাঁর একটি লেখা বুয়েটের বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘অযান্ত্রিক’-এ প্রকাশ পায়। লেখার শিরোনাম ছিল ‘অ্যা ডোর কল্ড ডেথ’ (মৃত্যু নামক একটি দরজা)। মেয়ে কেন এই শিরোনামে লিখল– তার কোনো উত্তর জানা নেই পুলিশ কর্মকর্তা বাবা মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলামের। গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে তিনি সমকালকে বলেন, মেয়ের ওই লেখাটাই এখন সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিচ্ছে। মৃত্যু নিয়ে লামিশা যা লিখেছে, ওর সঙ্গে সেটাই ঘটবে, ভাবতেও পারিনি! লেখাটি পড়ে বুয়েটের শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীরাও কাঁদছে।

লামিশার লেখার শেষ অংশ ছিল এমন– আমি মা ডাক শুনতে পেলাম। ঠিক সেই বিস্তীর্ণ জঙ্গলের মাঝখানে ছিলাম দাদির বাড়ির পেছনে, যখন তার বিষণ্ন কণ্ঠস্বর উচ্চারিত হয়েছিল। এবং তার কথা শেষ হওয়ার পরপরই, মাটি কাঁপতে শুরু করে, যেন একটি দৈত্য তার পথ দিয়ে যাচ্ছে। ভেতরে সুড়ঙ্গ। কিন্তু আমি সেই প্রাণীর মুখোমুখি হওয়ার আগেই, আবার এই যন্ত্রণাদায়ক শব্দ ‘মা’র মুখোমুখি হয়েছিলাম।

- Advertisement -

পুলিশের রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-১-এর (আরঅ্যান্ডসিপি) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালে লামিশা ও রাইশার মা স্ট্রোকের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দুই মেয়েকে নিয়েই চলছিল জীবন। ওরাই আমার পৃথিবী ছিল। জীবনে হয়তো আর কাউকে হারাতে হবে না, এই বিশ্বাস নিয়েই চলছিলাম। হঠাৎ সেদিন সন্ধ্যায় এক দুর্ঘটনায় হারাতে হলো বড় মেয়ে লামিশাকে। ছোট মেয়েকে তেমন টেনশন করা লাগে না। ওকে নিয়ে বেশি টেনশন করা লাগত। মেয়েটা সব সময় বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকত, নিজের খেয়াল রাখারই সময় হতো না তার। আর ওকেই হারাতে হলো আমার। ঘটনার দিন লামিশার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় রাত ১০টা ৩ মিনিটে। ওই সময় বারবার বলছিল, বাবা আমার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে, খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি হয়তো আর বাঁচব না; ভেতরে এসে তুমি আমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যাও; আমাকে বাঁচাও। খুব করে অনুরোধ করে বলে, বাবা নিয়ে যাও। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ওই ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছেন। তাদের মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন ও লামিশা ইসলাম মারা যান।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles