
ছিপ হাতে বসে থাকি এই ভেবে, একদিন পায়ের কাছ দিয়ে একটি নদী জেগে উঠবে। সে নদীতে মাছ জন্ম নেবে। মাছেরা দলবেঁধে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াবে। এভাবে একদিন পায়ের কাছে এসে হাজির হবে দলছুট কিছু মাছ। সঙ্গত কারণ এই যে, মাছেরাও প্যালেস্টাইনের শিশুদের মতো ক্ষুধার্ত হয়।
ওরাও চোখ পাতে ঝলসানো টোপের দিকে। বড়শীতে গেঁথে রাখা কেঁচো খেতে একটি খোকাবাবু মাছ এগিয়ে এসে মুখ খুলতেই খপ করে তুলে নেব বাঁকানো ছিপ। মরি-গো বাঁচি-গো বলে সে লাফাতে থাকবে। শিকার যত লাফাবে আমি তত খুশি হবো। অতঃপর সে উনুনে সিদ্ধ হয়ে ভাতের থালায় চকচক করবে।

আমি আধুনিক মানুষ। কেউ আমাকে প্রতারক বলতে পারবে না। এই যে লোহার বড়শীতে নরম কেঁচো রেখে ইঙ্গিত দেওয়া, এটা রিলিফের কেঁচো – প্রাণ বাঁচাতে হা করে গিলে ফেল। এই মৃত্যু ফাঁদ প্রতারণা নয়। নিষ্পাপ মাছকে খাবার প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে এনে হাপুস হুপুস করে ওদেরই খেয়ে ফেলা চাতুরি নয়।
তা হলে কি দাঁড়াল! প্রতারণার ফাঁদে আটকানোর জন্য নদী কামনা। নদীতে মাছের জন্য অপেক্ষা। বাঁকা ছিপে ঝুলন্ত নূপুরহীন নৃত্য। তাতে আমার চরম আনন্দ। ভেবে দেখুন আশ্চর্য সাফল্যের সাথে মানুষের কতিপয় ইচ্ছে পূর্ণতা পায়।
যদিও লোকে বলে, কোন কোন মাছ অন্য মাছকে আদর করে ফিরে পেতে চায়। মাছেরাও জানে কী করে ভালোবাসতে হয়। যে ভালোবাসা জন্ম নেয় নদীতে। এসব কথা লোকে বলে।
স্কারবোরো, কানাডা