
সিয়েরা ক্লাবের কানাডিয়ান চ্যাপ্টার বলেছে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহের কপ২৬ সম্মেলন হতাশা দিয়ে শেষ হয়েছে
জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে শনিবার শেষ মুহূর্তের চুক্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কানাডার পরিবেশবাদী সংগঠন ও রাজনীতিকরা। এতে হতাশা যেমন আছে, একইসঙ্গে আছে প্রত্যয়ও।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০০ এর মতো দেশ বিতর্কিত জলবায়ু প্রতিশ্রুতিতে সায় দিয়েছে। এতে চূড়ান্ত যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেখানে কয়লার বিষয়ে যে ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছিল তাতে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
স্মল আইল্যান্ড স্টেটসহ বেশ কিছু দেশ শনিবার এ ব্যাপারে তাদের গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের সবচেয়ে বড় উৎস কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বাতিলের পরিবর্তে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার যে কথা বলা হয়েছে এ হতাশা মূলত তাতেই। এ পরিবর্তনটি আনা হয়েছে ভারতের প্রভাবে।
সিয়েরা ক্লাবের কানাডিয়ান চ্যাপ্টার বলেছে, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহের কপ২৬ সম্মেলন হতাশা দিয়ে শেষ হয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, চূড়ান্ত চুক্তিটি বৈশি^ক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছোট একটি পদক্ষেপমাত্র, বড় কোনো পদক্ষেপ নয়। ডেভিড অ্যাটেনবোরোর ভাষায় বললে, আমাদের অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত আশার, ভয়ের নয়।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্কও ছিল। এক টুইটে নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতি ডিগ্রি উষ্ণায়ণের ভগ্নাংশের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানুষ ও আমাদের প্রিয় স্থানগুলোকে রক্ষার নতুন ঘোষণা নিয়ে আমরা গ্লাসগো ছেড়েছি।
স্কটল্যান্ড থেকে গ্রিন পার্টির এমপি এলিজাবেথ মে এক টুইটে বলেন, কয়লার ব্যাপারে সুর নরম করা হয়েছে ভারত, চীন ও অন্যদের তুষ্ট করতে। বৈশি^ক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে ধরে রাখার আশাটি এখনও হারিয়ে যায়নি। কিছুটা হলেও বেঁচে আছে।
পরিবেশগত ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্যাথরিন হ্যারিসন। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্য দিয়ে কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেছে। কিন্তু এই শতাব্দিতে পৃথিবী ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উষ্ণতা বৃদ্ধির পথে রয়েছে। তারপরও বলবো, আগামী বছরের সম্মেলনে উচ্চাকাক্সিক্ষ লক্ষ্যের যে দাবি তা আশাব্যঞ্জক। এছাড়া প্রয়োজনীয় অগ্রগতি অর্জনে কানাডার মতো ধনী ও উন্নত দেশগুলোর যে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থায়ন প্রয়োজন সেটাও ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
সম্মেলন কানাডার জীবাশ্ম জ¦ালানি শিল্পকেও কড়া ভুল বার্তা দিয়েছে। উষ্ণায়ন লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেশগুলো রক্ষা করলে ২০৩০ সালের পর কানাডার জীবাশ্ম জ¦ালানী হ্রাস পেতে বাধ্য। খবর: দ্য কানাডিয়ান প্রেস।