
ছোট বেলায় ভূগোল পাঠের সময় দেশের ম্যাপ আঁকতে গিয়ে আমাদের কষ্টের ফিরিস্তি দেখে আমাদের তৎকালীন কুষ্টিয়ার স্কুল শিক্ষক বলেছিলেন, “মাতা থিকে ওই বড় একটা পুরো ম্যাপ আকানুর কতা বাদ দিয়ে দেও বাপু”. বলে খাতায় বর্গাকৃতির একটি দাগ কেটে সেই বর্গের মধ্যে ম্যাপ একে তারপর বর্গটিকে লম্বালবমি এবং আড়াআড়ি দাগ দিয়ে অনেক গুলি ভাগ করলেন। তারপর বললেন। বাপু নেও, এইবার একটা একটা কইরে ছোট ঘরের মদ্দি যা আচে তাই আঁকো, তালি পারে এক সময় পুরো মাপ হয়ে জাবিনে।
তখন বুঝিনি সেটি জীবনের জন্য কত বড় দর্শন ছিল।
এখন দেশে বিদেশে ডিগ্রি নিয়ে, দীর্ঘদিন পেশাগত কাজ করে সেই দর্শনই কাজে লাগাচ্ছি !!! আমাদের কাজের অধিকাংশ ক্লায়েন্ট হলো সহায়-সম্বল হীন, আশাভরশাহীন মানুষ। সব কিছুর সাথে তাদের আশাকে জাগ্রত করা বা আশার উপর বিশ্বাস করানোও আমাদের একটি কাজ, সেই ক্ষেত্রেও সেই শিক্ষকের দর্শন অনেক কাজে দেয়।
রবীন্দ্রনাথ কোন এক জায়গায় লিখেছিলেন, “পথের প্রান্থে মোর তীর্থ নয়, পথের দুধারে আছে মোর দেবালয়”. পথের প্রান্তে বা তীর্থে যাত্রা শেষ করেও যদি তীর্থ শেষ পর্যন্ত না হয় তাহলে খুব একটা কষ্ট হবে না, যদি কিনা পথের দুধারের কাজগুলি করি বা সেই ছোটছোট অর্জনকে উদযাপন করি !!!