5.1 C
Toronto
সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫

বাবা আমার লাশটা নিয়া যাইও, আমি মইরা যামু

বাবা আমার লাশটা নিয়া যাইও, আমি মইরা যামু - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

সতেরো বছরের নাফিসা হোসেন মারওয়া। চলতি বছর টঙ্গীর শাহাজ উদ্দিন সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছিল ।

নাফিসার বাবা আবুল হোসেন পেশায় একজন চা দোকানি। নাফিসা ও তার ছোট বোন রাইসাকে নিয়ে বাবা আবুল হোসেন থাকতেন টঙ্গীর এরশাদনগর বস্তি এলাকার আট নাম্বার ব্লকে একটি ভাড়া বাড়িতে। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে নাফিসার মা কুলসুম বিদেশে পাড়ি জমান কয়েক বছর আগে।

- Advertisement -

এরই মধ্যে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। নাফিসা রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনে যোগ দেয়। বাবা বিষয়টি জানতে পেরে নাফিসাকে নিষেধ করেন। গত ১ আগস্ট নাফিসা চলে যায় ঢাকা জেলার সাভারের বক্তারপুর এলাকার মামার বাড়িতে। সেখান থেকে ফের যোগ দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে।

গত ৫ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় নাফিসা। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে তার বাবা হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে আসেন টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকায়। রাতেই লাশ দাফন করা হয় এলাকার স্থানীয় গোরস্থানে।

নাফিসার মৃত্যুর পর বাবা আবুল হোসেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বসে থাকেন কবরের পাশে। মেয়ের প্রিয় জবা ফুল এনে জড়ো করছেন কবরের পাশেই। কখনো কখনো চিৎকার করে কেঁদে উঠেন।

বাবা আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, আমার ২টা মেয়ে। নাফিসা বড়। আমি গরিব। কষ্ট করে মেয়েদের লেখাপড়া চালাইতাম। ওদের মা বিদেশে গেছে। আমার কোনো জমি নাই। দুইটা মেয়েই আমার সম্বল ছিল। আন্দোলন তো থামল। আমার মেয়ে তো আইলো না। গুলি লাগার পর আমার মা (নাফিসা) ফোনে আমারে বলছে- বাবা আমার লাশটা নিয়া যাইও, আমি মইরা যামু।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles