-0 C
Toronto
বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

ছাত্রজনতার বিজয়

ছাত্রজনতার বিজয়
ছাত্রজনতার বিজয়

ছাত্র-জনতার যু‌গোপৎ আন্দোল‌নে সম্প্রতি শেখ হা‌সিনার সরকা‌রের পতন হয়ে‌ছে। ছাত্রজনতার বিজয় অ‌র্জিত হল। একটা রাজ‌নৈ‌তিক পট প‌রিবর্তন হল। য‌দিও আন্দোল‌নের মাধ‌্যমে সরকারের প‌বির্তন বাংলা‌দে‌শে নতুন না। কারন আওয়ামীলীগ, বিএন‌পিও ছাত্রজনতা মি‌লে ৯০ স‌নে স্বৈরাচা‌রি এরশাদ সরকার‌কেও হ‌টি‌য়ে‌ছিল। তারও আগে ৭৫ সা‌লের ১৫ই আগ‌স্টে বঙ্গবন্ধু‌কে হত‌্যার মাধ‌্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটা‌নো হ‌য়ে‌ছিল। ১৯৯৬ সা‌লে ও ২০০৬ সা‌লে বিএন‌পি সরকারের পতনও জনগণ দে‌খে‌ছে। এ সমস্ত আন্দোল‌নে সরকার প‌রিবর্তন হ‌য়ে‌ছে, কিন্তুু আস‌লে রাজনী‌তি ও সমা‌জের কী কোন গুনগত প‌রিবর্তন হ‌য়ে‌ছে। জোর দি‌য়েই বলা যায় হয় নাই। তাহ‌লে আমা‌দের কোথায় প‌রিবর্তনটা জরুরী?

বাংলা‌দে‌শে যে প‌রিবর্তনটা সব‌চে‌য়ে বে‌শি জরুরী তা হল মানু‌ষের ম‌নোভাব ও স্বভা‌বের প‌রিবর্তন। শুধুমাত্র সরকার প‌রিবর্তন ক‌রে তেমন কোন লাভ হ‌বেনা। যেমন অতী‌তে হয়‌নি।

- Advertisement -

ক‌বি ইম‌তিয়াজ মাহমু‌দ সম্প্রতি তার ফেসবুক পো‌স্টে বলে‌ছেন, দাসেরা প্রভু বদলায়, কিন্তুু নি‌জেদের স্বভাব বদলায় না।

শেখ হা‌সিনার সরকা‌রের পত‌নের পর দে‌শে এখন যা চল‌ছে তা আমাদের জাতীয় চ‌রি‌ত্রের আসল রুপ। আমা‌দের স্বভাব একটুও বদলায় নাই। শেখ হা‌সিনার আম‌লে বি‌শেষ এক‌টি গো‌ষ্ঠী চু‌রি, লুটপাট, হত‌্যা ও গুম ক‌রে‌ছে।

এখন আরেক‌টি গো‌ষ্ঠী গণহা‌রে চু‌রি, লুট হত‌্যায় মে‌তে উঠে‌ছে।

এটার মূল কারন ব‌্যক্তিমানু‌ষের নে‌তিবাচক ম‌নোভাব। তার ম‌ধ্যে অ‌তি‌লোভী চ‌রিত্র,

ব‌্যক্তির আত্ন‌নিয়ন্ত্রনের অ‌নিচ্ছা, অস‌হিষ্ণুতা, সমা‌জে বিচারহীনতা, ডাইভার‌সি‌টিকে গ্রহ‌ণ করার ক্ষে‌ত্রে নে‌তিবাচক মান‌সিকতা,

ইনক্লু‌সিভ‌নে‌সের অভাব,

ন‌্যায়নী‌তির শিক্ষা ও চর্চার অভাব। মানুষ সততা ও ন‌্যায়নী‌তির শিক্ষা লাভ ক‌রে প‌রিবার, ‌শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজ থে‌কে। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান এ সমস্ত শিক্ষা দেয়ার কথা তা গত ৫০ বছ‌রে ধ্বংশ ক‌রে দেয়া হয়ে‌ছে। দে‌শপ‌রিচালকরা ন‌্যায়ন‌ী‌তি ও মুল‌্যবোধ চর্চা শে‌খে‌নি। অবশ‌্য বর্তমান তরুন প্রজন্মকে ভিন্নধারার ম‌নে হ‌চ্ছে। সেটাই আশার কথা। কারন তাঁরা শুধু বাংলা‌দে‌শের নাগ‌রিক না। তাঁরা গ্লোবাল সি‌টি‌জেন।

নতুন তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হি‌সে‌বে নোব‌েল বিজয়ী অর্থনী‌তি‌বিদ ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস‌কে ম‌নো‌নিত করা হ‌য়ে‌ছে। তি‌নি হয়ত দে‌শে আইনশৃংখলা ফি‌রিয়ে নি‌য়ে আস‌বেন। দে‌শে নী‌তি ও প্রতিষ্ঠানগত কিছু প‌রিবর্তন আন‌তে পার‌বেন। তারপর এক দু্ই বছ‌রের ম‌ধ্যে ওনার সরকারকে নির্বাচন দি‌তে হ‌বে। নির্বাচন দি‌তে দে‌রি করল‌ে ওনার সরকারও টিক‌বে না।

উনি ক্ষমতা বে‌শি‌দিন ধ‌রে রাখ‌বেন না হয়ত। নির্বাচন দি‌বেন। সেই নির্বাচ‌নে কারা জি‌তে আস‌বেন?

ধ‌রেই নেয়া যায় আবার সেই বিএন‌পি, জামাত, জাতীয় পা‌র্টি, কিছু বামপন্থী ও ডানপন্থী দল। কিছু ব‌্যতিক্রম ছাড়া এ সমস্ত দলের নেতা‌নেত্রীকে আমরা সবাই চি‌নি। তা‌দের চ‌রিত্র ও স্বভাব সম্প‌র্কেও আমরা জা‌নি। কিছু প‌রিবর্তন আস‌বে। কিন্তুু সাম‌গ্রিক প‌রিবর্তন কী আস‌বে? মানু‌ষের চ‌রিত্র, স্বভাব কী রাতারা‌তি বদ‌লে যা‌বে। সেই পু‌লিশ, সেই আমলাতন্ত্র সেই সেনাব‌া‌হিনী, সেই শিক্ষক!

যে ছাত্র সমাজ আন্দোলন ক‌রে এক‌টি স্বৈরশাসকের পতন ঘটাল, তাঁ‌দের বে‌শি বে‌শি প্রতি‌নি‌ধি য‌দি নতুন সরকা‌রে এবং প‌রব‌র্তি নির্বা‌চিত সরকা‌রে বে‌শি‌ বে‌শি স্থান পায়, তাহ‌লে দে‌শে আসল গুনগত প‌রিবর্তন আস‌তে পা‌রে। সাম্প্রতিক আন্দোল‌নে বিজয়ীদের –গ্লোবাল সি‌টি‌জেন‌দের কা‌ছে সেই প্রত‌্যাশাই রইল।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles