-0 C
Toronto
বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

কেন স্বাধীনতা?

কেন স্বাধীনতা?
কেন স্বাধীনতা

লিখতে পারার স্বাধীনতা। মন্তব্য করার স্বাধীনতা। কথা বলার স্বাধীনতা। বাংলাদেশের মানুষ অনেক বছর পরে এই স্বাধীনতা পেয়েছে। হতে পারে ক্ষণস্থায়ী- তবু স্বাধীনতা।

স্বাধীনতার পরে ৫২ বছরে মানুষ সীমাহীন দুর্নীতি সহ্য করেছে।

- Advertisement -

বিগত দিনের সকল রাজনৈতিক দল দেশ পরিচালনায় ব্যার্থতার প্রমান দিয়ে গেছেন। আমরা রক্তপিপাসু কাউকেই চাই না। এটা একটা দেশ- কারও ব্যাক্তিগত সম্পদ না।

বিগত ৫২ বছরে দেশের যত ক্ষতি এর রাজনৈতিক নেতারা করে গেছেন তা সেরে উঠতে ঐক্যবদ্ধতা, কঠোর পরিশ্রম এবং বছরের পর বছর সময় লাগবে।

দেশ পাকিস্তান থেকে মুক্ত হওয়ার পরে যখন দেশের মানুষ না খেতে পেয়ে দুর্ভিক্ষে মারা গেছে তখন কিন্তু কেউ বলে নি যে “এর জন্য দেশ স্বাধীন করেছি?” গত ৫২ বছরের ক্ষত সারতে আপনারা ৫২ ঘন্টা সময়ও দিলেন না?

আর একটা কথা, গত ১৫ দিনের এই ছাত্র আন্দোলনে দেশের শত শত নিষ্পাপ ছাত্র মৃত্যুবরণ করেছে। কত ছাত্রদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর আপনারা পড়ে আছেন কে কত জড় পদার্থের ক্ষতি করল? মানুষের জীবনের চেয়ে জিনিসের মূল্য এত বেশি হল?
আমি ভিডিও দেখেছি। আপনাদের প্রাণপ্রিয় জড় পদার্থগুলোর ক্ষতি করেছে এমন কাউকেই ছাত্র বলে মনে হয়নি। শুধু মনে হয়েছে তারা সাধারন জনগন। কিংবা হয়ত কোনও লীগ/দলের কেউ। শুধু শুধু এর রেশ ধরে মহান ছাত্র আন্দোলনকে তিরস্কার করবেন না।

ছাত্র আন্দোলনের সময় চুপ থাকা আমাদের ভাইয়ারা এখন জড় পদার্থের ক্ষতি নিয়ে যা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই এখন কোনও দল করে না। বেশিরভাগই গরীব মানুষ যারা এক টুকরো গরুর মাংস কিনে খেতে পায় না। বেগুনের বদলে কুমড়ো আর গরুর মাংসের বদলে কাঁচা কাঁঠাল খেতে খেতে তাদের রুচির দফা রফা হয়ে গেছে। তাদের মনের শান্তির জন্য তারা যদি কোথাও থেকে মাছ মুরগী নিয়ে যায় তা অন্যায় বটে কিন্তু নয় বছরের নিষ্পাপ ছাত্র হত্যা কিংবা ১৫ বছরের ছাত্রকে রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার করার মত বড় কোনও গুনাহ না। এখনও সময় আছে, জড় পদার্থ নিয়ে কান্না কাটি বাদ দিয়ে দেশ গড়ার কথা চিন্তা করুন। দেশটা কিন্তু আমাদের সকলের। আর আমাদের সকলকে নিয়েই দেশ।

আর সকলকেই তাদের কর্মফল ভোগ করতে হবে। একে অপরের প্রতি যতই আঙুল তোলেন না কেন, নিষ্পাপ ছাত্রদের জীবনের বিনিময় কোনও কিছু দিয়েই হবে না।দেশের রাজধানীর বহু ভবন পুড়েছে বহুবার। একটি বিশেষ ভবন যার সামনের সমস্ত রাস্তা সাধারন জনগনের জন্য নিষিদ্ধ ছিল, যার সামনে দিয়ে সাধারন রিকশাওয়ালাদের যাতায়াত নিষেধ ছিল, সাধারন মানুষ সেই ভবনকে কি করল তা নিয়ে এত মাথ্যাব্যাথা হলে নিজ দায়িত্ব আরেকটি ভবন তৈরী করুন। তবে জনগনের মনে এমন বিষ তৈরী করবেন না যেন সাধারন জনগন সেই ভবনকেএ ধ্বংস করে।

আমি আমার যা ইচ্ছা লেখার স্বাধীনতা পেয়ে মহাখুশি। তাই বলে আমি অলীক কল্পনায় বসবাস করি না। আমি জানি এরপরেও হয়ত অনেক খুঁতযুক্ত নেতা আসবেন। দুর্নীতি করবেন, স্বৈরাচার হবেন, স্বজনপ্রীতি করবেন। তবে আমি খুশি – আর যেই আসুক না কেন বাংলা মানুষের রয়েল বেঙ্গল চেহারাটা দেখে তারপরে আসবেন। প্রথম থেকেই ভয়ে থাকবেন। বাংলার মানুষের রক্তে শেরে বাংলা আছেন, বঙ্গবন্ধু আছেন, শহীদ জিয়া আছেন, মওলানা ভাসানী আছেন। তারা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী জাতি। তাই তাদের সাথে কোনও হাংকি পাংকি করা যাবে না।

জানি এই লেখাটা পড়ে অনেক ভাইয়াদের মাথায় আগুন লেগে যাবে। আমি একজন দেশ ত্যাগ করা মানুষ। দেশ নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার আমার নেই। তবু মন মানে না তাই লিখলাম। স্বাধীনতা চর্চা করলাম। আমি বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দল সমর্থন করি না। তবে করতে চাই। আমাকে একটি যোগ্য দল দিন, আমি সমর্থন করব। আমার ব্যক্তিগত চিন্তা আমার ব্যক্তিগত ওয়ালে লিখে রাখলাম আমার ব্যক্তিগত মানুষদের জন্য।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles