
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে প্রায় ৩ সপ্তাহ ভারতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে যখন জল্পনা-কল্পনা চলছে, তখন তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পরপরই এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এতে তার ভারতে অবস্থানের সময় ফুরিয়ে আসছে। এমনটি জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার উপদেষ্টাগণ, মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য এবং তাদের সহধর্মিণীসহ সব সদস্যের কূটনৈতিক পাসপোর্ট অবিলম্বে বাতিল করা হবে। এই পাসপোর্ট প্রত্যাহারের আদেশ কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের জন্যও যাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। দু’টি তদন্তকারী সংস্থার ছাড়পত্রের পরই সাধারণ পাসপোর্ট জারির সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকারি সূত্রের বরাতে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাতিল হওয়া কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোনো পাসপোর্ট নেই। ভারতীয় ভিসা নীতির আওতায় কূটনৈতিক বা অফিসিয়াল পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি নাগরিকরা ভিসামুক্ত প্রবেশ করতে পারবেন এবং ৪৫ দিন পর্যন্ত দেশটিতে অবস্থান করতে পারবেন। শনিবার পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে কাটিয়েছেন ২০ দিন। যার ফলে, ফুরিয়ে আসছে দেশটিতে তার বৈধভাবে অবস্থানের সময়।
শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ও অন্যান্য সুবিধা বাতিল তাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের মতো ঝুঁকিতেও ফেলতে পারে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে ৫১টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৪২টি হত্যা মামলা।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় পড়বে, যা পরে ২০১৬ সালে সংশোধিত হয়েছিল। তবে মামলায় যদি রাজনৈতিক কোনো ধরন বা উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ ভারত সরকার নাকচ করতে পারে।
এছাড়া, প্রত্যর্পণ আবেদন প্রত্যাখ্যানের আরও একটি কারণ হচ্ছে, যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা যদি ‘সৎ উদ্দেশ্যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে’ করা না হয়ে থাকে।