
“আস সালামু আলাইকুম.. ওলাইকুম আস সালাম.” বাক্যদুটি আরবী না ফারসী ভাষা থেকে এসেছে তা আমার সঠিকভাবে জানা নেই। এই না জানাটার সাথে পাপপুন্য জড়িত কীনা জানিনা, তবে এটা যে আমার এক ধরনের ব্যর্থতা তা শ্বীকার করি।
বাক্যদুটি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করি হরহামেশাই। কারো সাথে কথা বলার আগে, বাক্যটি ব্যবহার করে, তারপর অন্য কথা শুরু করি। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। শুনেছি বাক্যদুটির বাংলা অর্থ “আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।”
বাংলাদেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন অারেকজনকে সম্মান বা শ্রদ্ধা জানানোর বহি:প্রকাশের অংশ হিসেবে বাক্যটির উচ্চারন ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। অন্যজন উত্তরে বলে, ” ওলাইকুম আস সালাম..।” শুনেছি যার অর্থ হল, আপনার ওপরও শান্তি বর্ষিত হোক। চমৎকার একটি রীতি। মানুষকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো ও মানুষে মানুষে সমতার ভিত্ত্বিতে বন্ধন তৈরীতে বাক্যদুটির ব্যবহার অতুলনীয় বটে।
আমার লেখার উদ্দেশ্য হল, আজকাল আমাদের সমাজে সালাম দেয়া ও নেয়ার উদ্দেশ্য ও স্টাইল নিয়ে। ইদানিং সালাম দেয়া ও নেয়ার মধ্যে একধরনের মনস্তাত্বিক বিষয় জড়িয়ে গেছে। অতিরিক্ত তৈল মর্দনে এটির ঘন ঘন ব্যবহার লক্ষ্য করার মত। উদ্দেশ্য বিশেষ স্বার্থ হাসিল করা। আবার এর মাধ্যমে শ্রেনী বৈষম্যের কদর্য দিকটিও লক্ষ্য করার মত। যেমন একজন বেশ প্রভাবশালী হলে তিনি তার চেয়ে যারা কম ক্ষমতাবান এ রকম অন্যসবার কাছে থেকে শুধু সালাম প্রত্যাশা করেন। উনি সালাম সাধারনত দেননা। শুধু নেন। আবার কমপ্রভাবশালি কেউ সালাম দিলেও” অলাইকুম আস সালাম..”কথাটা মুখ দিয়ে উচ্চারন করেন না। এটা এক ধরনের ক্ষমতার দম্ভ বা বিরক্তির নোংড়া বহি:প্রকাশ।
যুগে যুগে মুসলিম সমাজে সাম্য ও ভাতৃত্ববন্ধনে ” আসসালামু আলাইকুম.., ওলাইকুম আস সালাম” বাক্যদুটি যে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করেছে তা কী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা ভবিষ্যতই বলতে পারে।
টরন্টো, কানাডা