
৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিলো হেলথ কানাডা। এর ফলে ইনডোরে জন্মদিনের উৎসব ও মাস্ক ছাড়াই শিশুদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নাগালের মধ্যে চলে এলো বলে মনে করা হচ্ছে। প্রদেশগুলো আগামী সপ্তাহ থেকে এ বয়সী শিশুদের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফাইজার-বায়োনটেক শিশুদের উপযোগী এমআরএনএ ভ্যাকসিন ডোজের অনুমোদন চেয়ে গত ১৮ অক্টোবর হেলথ কানাডায় আবেদন করে। পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা শেষে হেলথ কানাডা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, এ ভ্যাকসিনের ঝুঁকির চেয়ে উপকারিতা অনেক বেশি।
কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর আগে ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের ওপর ট্রায়ালে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের যে ধরনের নিরাপদতা ও কার্যকারিতা পাওয়া গিয়েছিল, একই রকম ফলাফল পাওয়া গেছে শিশুদের ওপর ট্রায়ালেও। ভ্যাকসিনটি কোভিড-১৯ থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিতে ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ কার্যকর এবং গুরুতর কোনো পাশর্^প্রতিক্রিয়া নেই।
হেলথ কানাডার চিফ মেডিকেল অ্যাডভাইজার ডা. সুপ্রিয়া শর্মা বলেন, সামগ্রিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু উভয়ের জন্যই এটা আশাজাগানিয়া খবর। মহামারির চতুর্থ ঢেউয়ের মধ্যে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়তে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ফাইজার-বায়োএনটেক শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের ফর্মুলেশনে সামান্য পরিবর্তন এনেছে। তাই শিশুদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনতে নতুন ভ্যাকসিন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে কানাডাকে। দ্রুততম সময়ে শিশুদের উপযোগী ২৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন শিগগিরই সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে কানাডা। এর সাহায্যে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী সব শিশুকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে।
ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী ফিলোমেনা ট্যাসির তথ্য অনুযায়ী, শনিবার নাগাদ এই ভ্যাকসিনের প্রথম চালান কানাডায় পৌঁছাতে পারে। আর ২৯ লাখ ডোজের সবগুলো আসবে সপ্তাহের শেষ নাগাদ।
এসব ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ামাত্রই শিশুদের মধ্যে তা প্রয়োগের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে প্রদেশগুলো। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জঁ ইভস ডুকলস বলেন, আমি মনে করি অভিভাকরা কিছুটা স্বস্তি বোধ করবেন। কারণ, সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বিজ্ঞানের ভিত্তিতে।
ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন ভ্যাকসিনেশনের কারণে কোনো ধরনের ঝুঁকি না থাকলে শিশুদের দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার সুপারিশ করেছে। তবে দুই ডোজের পরামর্শের ভাষাটা ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে যতটা শক্তিশালী ছিল ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ততটা জোরালো নয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২৯ অক্টোবর শিশুদের মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন অনুমোদন করে। এরপর এখন পর্যন্ত ২৫ লাখের বেশি শিশুকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনাও হয়েছে।