11.8 C
Toronto
শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫

ভাইয়ের নিথর দেহ কাঁধে নিয়ে পালান দুই বোন

ভাইয়ের নিথর দেহ কাঁধে নিয়ে পালান দুই বোন
ভাইয়ের নিথর দেহ কাঁধে নিয়ে পালান দুই বোন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইসমাইল হোসেন রাব্বি। তার লাশ ফেলে রাখা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরের দিন ভাইয়ের লাশের সন্ধান পান বড় দুই বোন মিম ও মিতু। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দিতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে আন্দোলনকারীদের সহায়তায় জোর করে ভাইয়ের লাশ ছিনিয়ে নেন তারা। পুলিশ লাশ আটকে দিতে পারে এই ভয়ে লাশের ট্রলি কাঁধে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান দুই বোন। গতকাল কথাগুলো বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠেন নিহত রাব্বির মেজো বোন মিম আক্তার।

রাব্বি মাদারীপুরের পাঁচখোলা ইউনিয়নের মিরাজ তালুকদারের ছেলে। তিনি শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাবা-মা ও দুই বোন ঢাকায় থাকেন। বাবা রিকশা চালান, মা টিউশনি করে কোনো রকমে সংসারের হাল ধরে রাখেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে নিরাপত্তার জন্য দুই বোন মিতু আক্তার ও মিম আক্তার রাব্বিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কিন্তু রাব্বি যৌক্তিক আন্দোলনে নিজেকে আর ঘরে আটকে রাখতে পারেননি। গত ১৭ জুলাই থেকে প্রতিদিনই তিনি কোটা আন্দোলনে যেতেন। তবে ৪ আগস্ট শাহবাগের আন্দোলনে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে মাথায় গুলি লাগে তার। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

- Advertisement -

বোন মিম আক্তার কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘পুলিশের ভয়ে ভাইয়ের মরদেহ কাঁধে নিয়ে আমাদের পালাতে হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখ আর কী হতে পারে! আমার ভাই আমার কলিজা ছিল। সেই কলিজাকে গুলি করে মারা হয়েছে। তার লাশটাও ওরা গুম করে ফেলতে চেয়েছিল।’ এ সময় তিনি আরও জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে রাব্বির লাশ দাফন করা হয়েছে।

রাব্বির বাবা মিরাজ তালুকদার বলেন, ‘আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।’ এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রাব্বিকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়াসহ সরকারিভাবে হত্যার বিচার দ্রুত শুরুর দাবি জানান।

নিহত রাব্বির মা আসমা বেগম বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলেকে নির্মমভাবে মাথায় গুলি করে মারা হয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles