
‘আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো সক্রিয়। তারা বিভিন্ন অজুহাতে ফিরে আসতে চাইছে। আমরা এদের আর ফিরে আসার সুযোগ দেব না। তাদের ফোনালাপে শোনা যায়, দেশের আশেপাশে আছে। চট করে ঢুকে পড়বে। আমরা চাই আপনি (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) চট করে ঢুকে যান। আমরাও ঠপাশ করে ধরে ফেলব।’
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফেনীর শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক সংলগ্ন জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এভাবেই বলছিলেন সমন্বয়করা।
‘আমরা বিশেষ কোন দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য আন্দোলন করিনি’ উল্লেখ করে এদিন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী মতানৈক্য বিপ্লবকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তারুণ্য সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। দেশে বাকস্বাধীনতা ছিল না, গণতন্ত্র ছিল না। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিগত সময়ে ফেনীর মানুষ কথা বলতে পারেনি। তাদের হাসিনার দোসররা অনেকটা জিম্মি করেছিল; যেন বসবাস ছিল জেলখানায়।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে হঠাতে পারলেও দেশ সংস্কার এখনও হয়নি, সেটার অনেক বাকি। আগামীর বাংলাদেশ সুশাসনের বাংলাদেশ। ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক কোন রাজনীতি থাকবে না। ছাত্র রাজনীতি থাকবে ছাত্র সংসদভিত্তিক। তারুণ্যের কোন দল-মত নেই। তারা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চায়, সুশাসনের বাংলাদেশ চায়।’
গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায়, শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাত এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফেনীতে এই ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ও ফেনীতে নিহত এবং আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হামযা মাহমুদের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন ফেনীর মহিপালে নিহত শহীদ শ্রাবণের পিতা নেসার আহমেদ। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বলেন, ‘এ হত্যার বিচার কঠোরভাবে হওয়া চাই ৷ আর কারো মায়ের বুক খালি না হোক। আমার একটা মাত্র পুত্রসন্তান। বিচার ছাড়া আমাদের চাওয়ার কিছু নেই।’
এছাড়া বক্তব্য রাখেন শহীদ ইকরাম হোসেন কাওসারের ভাই ইমরান হোসেন, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক খালিদ হাসান, তাসনিয়া নওরিন, আলী আহমেদ আরাফ, মো. মহিউদ্দিন, জিয়া উদ্দিন আয়ান, মহিদুল ইসলাম রিন্তু।
বক্তারা জানান, মহিপালে ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর নিজাম হাজারী ও তার দোসররা হামলা চালিয়ে ১৪ জনকে নিহত করেছে। অবিলম্বে যেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শেষে ফেনী জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের সাথে দেখা করে খোঁজ নেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।