
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে এলডিপি নামের একটি দল বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবী জানিয়েছে। যা শুধু অবাস্তবই নয়, মুলত অসম্ভব। যারা এ ধরনের প্রস্তাব দিচ্ছেন তারা অর্বাচীন। এর আগে দেশে জামাতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল যা কোন কাজে আসে নি।
মুলত যে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ডের দায় দলের নেতাদের। বিগত জুলাই আগষ্ট গণহত্যা এবং অপরাধমুলক কর্মকান্ডের জন্যে কোন দলের লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থক দায়ী নয়। এতবড় একটা ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নামক দলটির নেতৃত্বের উচিত ছিল স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নুতন নেতৃত্বের হাতে দল পরিচালনার ভার ছেড়ে দেয়া।
নেতৃত্ব বদল গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। এমনিতেই যে কোন গনতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনে পরাজিত হলে দলের নেতৃত্ব বদল হয়। আর একটি গণ-অভ্যুত্থানের পর শত শত ছাত্র জনতা পুলিশ হত্যার পর সেই সময়কার ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্ব এখনো বহাল থাকে কি করে? বহাল আছে বলেই সাধারণ কর্মী সমর্থকরাও বিপদে পড়ছে। আরো আগেই যদি বা এখনো যদি ভুল বা ব্যর্থতা স্বীকার করে মুল নেতৃত্ব পদত্যাগ করে, নুতন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয় তাহলে সম্ভবত লক্ষ লক্ষ নেতা কর্মীরা নিরাপদে রাজনীতি ও বাস করতে সক্ষম হবে।
এলডিপির কর্ণেল অলি আহমেদ কয়েকদিন আগে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আর নির্বাচন করবেন না। ভাবলাম সময়োপযোগী ঘোষণা দিয়ে বাহবা পেতেই পারেন। ওমা! কিছুক্ষণ পরেই দেখি তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় তার পুত্রধনকে তার রাজনীতির উত্তরসূরী ঘোষণা করেছেন। আগামী নির্বাচনে তার এলাকা থেকে নির্বাচন করবেন তারই সন্তান। অর্থাৎ এলডিপি নামের যে সংগঠনটির কর্মীরা এতদিন তার জন্যে শ্লোগান দিয়েছে তারা ছিল চাকর বাকর! রাজনীতিও আজকাল জমিদারী তা তিনি নুতন করে স্মরণ করিয়ে দিলেন। তিনি অবসর নিলেন আর পরবর্তী জমিদার হিসেবে তার সন্তানের মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন। এই হলো অবস্হা। এদের কথায় বা পরামর্শে বিপ্লবী সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। সত্যিকার সংস্কার করতে হলে দেশের ১৮ কোটি মানুষকেই কাউন্ট করতে হবে বা ধর্ত্যবে নিতে হবে। হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে দেশে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর শান্তিই যদি না থাকে তাহলে এইসব রাজনীতি দিয়ে মানুষ কী করবে? কী কাজে লাগবে?
স্কারবোরো, কানাডা