7.9 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

চাইনিজ স্টাইল চিকেন-এগ ফ্রাইড রাইস

চাইনিজ স্টাইল চিকেন-এগ ফ্রাইড রাইস
চাইনিজ স্টাইল চিকেন এগ ফ্রাইড রাইস

গতকাল রান্না করেছিলাম চাইনিজ স্টাইল চিকেন-এগ ফ্রাইড রাইস। ওয়াও! আমি নিজেই ওয়াও বলছি তা নয়। প্রথমে বাচ্চাদের খেতে দিয়েছিলাম। তারা নম্বার দিয়েছে 10/9.9. আমার husband একটু টেস্ট করে বললেন, “আমার কাছে এটা রেস্টুরেন্ট থেকেও মজা লেগেছে।” তারপর তিনি বললেন, “চলো আমার employeeকে দিয়ে আসি এক প্যাকেট।” সে ছেলেটা হলো একজন বাঙালি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট। আমার husband এর সঙ্গে কাজ করছে। তো হয়েছে কি যা কিছুই হয় না কেন ঐ ছেলেটাকে তিনি আগে স্মরণ করেন। ঐ ছেলেটা নাকি ওনার মনে জায়গা করে নিয়েছে। এতটা ভদ্র ছেলে দেখা নাকি সত্যিই অনেক কঠিন।

সে বিশ বছরের একটা ছেলে। দেশ থেকে বাবা-মা ছেড়ে সুদূর কানাডায় এসেছে পড়তে। এখানে তার নিকট আত্মীয়ও নাই। একাই বলা যায় সে তার দিনযাপনে। একা পড়তে আসা অনেক স্টুডেন্টকে আমি নিজে চোখে দেখেছি নৈতিকতার অবক্ষয়ের তলানিতে। কী নিদারুণ কষ্ট হয় দেখে। শুধু দেশ থেকে আসা স্টুডেন্টরাই যে এমন হয় তা নয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে থেকেও কেউ কেউ একেবারেই অনম্র, অমানবিক, অমার্জিত আচরণে মোড়ানো। এখানে বাবা-মা ও পরিবেশকে দায়ী করব না। কারণ সবকিছু ঠিকঠাক থেকেও কোনো কোনো সন্তানের আচরণ শালীনতা বহির্ভূত, অমায়িক না। এগুলো ভাবলে হৃদয়ে র*ক্তক্ষরণ ছাড়া কিছুই হয় না। এটা নিতান্তই ভাগ্যের পরিহাস।

- Advertisement -

সেইজন্যই বলছি ঐ ছেলেটার মতো নৈতিকতা, ভদ্রতা, অমায়িক আচরণ সাধারণত কম দেখা যায়।

সবচেয়ে বড়ো কথা হলো তার ধর্মের প্রতি একাগ্রতা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে ছেলেটা। সে ভাড়া থাকে একটা মসজিদের পাশে। সুতরাং যখন সে বাসায় থাকে তখন সে মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করে। আর যখন সে কাজে যায় তখন তার সঙ্গে জায়নামাজ থাকে। সময় মতো সালাত আদায় করে নেয় কাজের জায়গাতেই। সন্তান এমন হোক সব বাবা-মায়ের চাওয়া। টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায় যে কোনোভাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো বা ধনী দেশে বাস করাও যায় কপালে থাকলে। কিন্তু এই যে ভদ্রতা, মার্জিত স্বভাব ও নৈতিকতার আদর্শপূর্ণ এটা নিতান্তই ব্যক্তি বিশেষের প্রাকৃতিকভাবে অর্জিত সম্পদ। যা টাকা দিয়ে, কোনো কিছু দিয়ে অর্জন করা যায় না।

যাই হোক, আমি ও আমার husband ঐ ছেলের বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম প্যাকেটটা দিতে, তখন সে নামাজের কিছুটা আগেই মসজিদে গিয়েছিল। পরে তার সঙ্গে দেখা হলো। খাবারটা দিলাম। সে অসংখ্যবার ধন্যবাদ জানালো on the spot। শুধু তাই নয়, ডিনার খেয়ে সে আমার husband এর ফোনে এমন সুন্দর করে একটা মেসেজ লিখে পাঠাল যার প্রতিটা বাক্যে শ্রদ্ধা-রেসপেক্টে ভরা। তার ইংলিশ বলার স্কিল ভালো। মেসেজটা সে ইংরেজিতেই লিখেছে। লিখেছে এতটাই ভালো লেগেছে যে “heartfelt gratitude” জানাতে চায়।

যাই হোক, শেষমেশ চাইনিজ ফ্রাইড রাইসের টেকনিক কিছুটা রপ্ত করতে পেরে আমিও দারুণ খুশী।
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles