
মার্কিন নারীদের ধর্মঘটন
বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ফের হোয়াইট হাউসের কুর্সিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই জয় মার্কিন পুরুষদের কাছে দুঃসংবাদ। ‘সেক্স স্ট্রাইক’-এর ডাক দিলেন সে দেশের নারীরা। কোনও পুরুষের সঙ্গেই আর শারীরিক সম্পর্ক করতে রাজি নন তারা।
তাদের দাবি ট্রাম্পকে জিতিয়েছেন পুরুষরা। এমন দাবিতে হাজার হাজার মার্কিন নারীরা শুরু করেছেন ৪বি আন্দোলন। কী এই আন্দোলন? সহজভাবে বললে পুরুষদের সঙ্গে যৌনতা, সম্পর্ক, বিয়েতে ‘না’। সন্তানের জন্ম দিতেও রাজি নন আন্দোলনকারীরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল একাধিক ভিডিয়ো। ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রগতিশীল মার্কিন নারীরা দক্ষিণ কোরিয়ার ‘৪বি’ আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের পথে হেঁটে চারটি জিনিসে ‘না’ বলছেন তারা।
আর এগুলো হলো- কোনও পুরুষের সঙ্গে ডেটে যাবেন না, কোনও পুরুষের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করবেন না, পুরুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন না এবং সন্তান প্রসব করবেন না।
কোরিয়ান ভাষায় ‘না’-কে ‘বি’ বলা হয়। সে কারণেই এই আন্দোলনের নাম রাখা হয়েছিল ‘৪বি’ মুভমেন্ট। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মার্কিন নারীদের মধ্যে এই ‘৪বি’ মুভমেন্ট প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে।
টিকটক ভিডিও করে এক মার্কিন নারী বলেন, ‘আগামী চার বছর কোনও পুরুষের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করব না।’ গর্ভপাতের ইস্যু তুলে ধরে আরও এক নারী বলেন, ‘যদি পুরুষরা আমাদের অধিকার খর্ব করার জন্যই এই নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকেন, তবে তারাও যেন আশা না করেন, কোনও নারী তাদের স্পর্শ করবেন। কান খুলে আমাদের কথা শুনে নিন আপনারা। আগামী চার বছর কোনও পুরুষের শয্যাসঙ্গী হব না আমরা।’
দক্ষিণ কোরিয়ায় এই আন্দোলন ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যা দেশটির সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
২০২১ সালে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়ুল বলেন, এ আন্দোলন তাদের দেশে নারী ও পুরুষের মধ্যে ‘সুন্দর সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার কমে যাওয়ার পেছনে ‘৪ বি’ আন্দোলনের প্রভাব রয়েছে। ব্রায়ান স্কট নামের এক এক্স ব্যবহারকারী গত ৭ নভেম্বর এক পোস্টে জানান, সার্চ ইঞ্জিনে অসংখ্য নারীকে ‘৪ বি’ সম্পর্কে সার্চ করতে দেখা গেছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পিএইচডিরত মিরা চোই সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে বলেছেন, “নারীরা সরকার আর রাষ্ট্র নিয়ে ভাবা শুরু করেছে। আর তখনই পুরুষরা তাদের ব্যর্থ করে দিচ্ছে।”
ট্রাম্প কি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেনট্রাম্প কি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন
অনেক নারী আশা করেছিলেন এবারের নির্বাচনে কমলা হ্যারিস জিতবেন এবং তাদের প্রজনন বিষয়ক অধিকারগুলো রক্ষা করবেন। এই নারীরা মনে করছেন তাদের এই আকাঙ্খাকে এবারের নির্বাচনে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।