
পাঁচ অগাস্টের তিন মাস হয়ে গেলেও পরাজিতদের মনে কোনো রকম অনুশোচনা দেখেছেন? ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, সামান্য দুঃখ প্রকাশ করতেও দেখিনি।
এরা শুধু জানতো নিজেদের আখের গোছাতে। ক্ষমতা আসবে-যাবে, পালাবদল হবে; এটাই কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাভাবিক বাস্তবতা; জ্বলজ্বলে সত্য। কিন্তু ক্ষমতা হারিয়ে তাদের মাথা খারাপ হবার অবস্থা হলো; ২০৪১ সাল পর্যন্ত থাকার স্বপ্ন হলো ধূলিসাৎ। জনরোষের মুখে লেজ তুলে পালিয়েও হিংস্রতা কমেনি। তাদের পক্ষে ভবিষ্যতে বৈধভাবে নির্বাচন করে, বৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়া, বৈধভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা অসম্ভব; তারা মানসিকভাবে তৈরি নয়, সে মানসিকতা তাদের গড়ে উঠেনি। বাংলাদেশে এদের রাজনীতি করার কোনো যোগ্যতা আছে কি?
পরাজিতদের সোশ্যাল মিডিয়ার আড্ডায় যদি ঢুঁ মারার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য আপনার হয়ে থাকে, দেখবেন এদের প্রতিশোধের কি নেশা! এদের কেউ আবার বাইরে দেখায় সাধু, তবে তারা ঠিকই লেজকাটা দলের আড্ডায় ঢুকে একই সুরে করে হুক্কাহুয়া। ইয্রাইল যেমন ফিলিস্তিনীদের মেরে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না, হামাস ধ্বংসের নামে অর্ধলক্ষাধিক নিরীহ শিশু, নারী, মানুষ মারছে আর মেরেই যাচ্ছে; এরাও স্বাধীনতা বিরোধী অযুহাত দেখিয়ে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ মেরেছে ভারতের মদদে। জনগণ একজোটে প্রতিরোধ না করলে সহজে থামতো না।
এরা ফিরতে চায় সিপিবি, বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা যেকোনো কিছু অবলম্বন করে। এরা আবার আসলে স্বাধীনতার উপর কালো থাবা দেবে কোনো ভুল নাই। ড. ইউনূস কে তারা বহু আগ থেকেই পছন্দ করে না। তারা উনার এই সাময়িক ক্ষমতা সহ্য করতে পারবে না সেটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের হুক্কাহুয়া কে খুব বেশি আমলে না নেয়াই ভালো।
যারা বলে কি পেয়েছি এ নতুন স্বাধীনতায়? তাদের বলি- এক নাম্বারের কাজটাই করে গেছে বিপ্লবীরা, জনগণ। সেটা হলো ভোট ডাকাতি করে মসনদে বসা হাসিনাকে বিদায় করা হয়েছে। জনগনের সাথে বেঈমানি করে হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দেয়া ডাকাতেরা বিদেয় হয়েছে, বা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বনে জঙ্গলে। শিক্ষা ধ্বংসের হাত থেকে থামিয়ে দেয়া গেছে। মানুষ এখন যা খুশি বলতে, লিখতে পারে। আয়নাঘরের বিদায়ঘণ্টা বেজেছে, চাটুকারিতা কমেছে। দেশ নিয়ে ছেলেখেলা বন্ধ হয়েছে। দ্রব্য মুল্যের দাম হাতের নাগালের বাইরে, সেটাও কমানোর চেষ্টা চলছে। তিন মাসে এরচাইতে বেশি কিছু আশা করা বোকামি। বিশ্বের সবচাইতে সম্মানিত ব্যক্তিকে আমার পেয়েছি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে।
এ বিপ্লব শত শত বছর ধরে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেবে- বাংলাদেশ নিয়ে খেলা করা যাবে না! বাংলাদেশের মানুষ যখন ধরে, তখন শেষ দেখে ছাড়ে! স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বলে কিছু নেই। দেশকে সবাই ভালোবাসে।
পরাজিতরা কি সহজে পাল্টাবে? বা আদৌও? কোনো লক্ষণ নেই। এদের পরবর্তী জেনারেশন হয়তো পাল্টাতে পারে। সেই আশায় আছি। তাতেও খুব একটা বেশি যায় আসে না। আমরা চলবো আমাদের মতো।
যত সময়ই লাগুক, আমরা একজোট হয়ে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবো। মানুষের ভোটের অধিকার, মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হবে ইনশাল্লাহ!
অটোয়া, কানাডা