-1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০২৫

মুসার এক ডজন বউ, সন্তান ১০২ জন, নাতি নাতনি ৫৭৮

মুসার এক ডজন বউ, সন্তান ১০২ জন, নাতি নাতনি ৫৭৮
ছবি সংগৃহীত

মুসা হাসাহ্যা কাসেরা, পূর্ব উগান্ডার মুকিজায় বসবাস করেন তিনি। বয়স হয়েছে ৭০ বছর। আর ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধের কিনা আছেন ১২ জন স্ত্রী। তার পরিবারে যতজন সদস্য, তাতে গোটা একটা গ্রাম হয়ে যায়। উগান্ডা বাসী বৃদ্ধ হার মানিয়েছেন খোদ রাষ্ট্রকেও। তার মোট সন্তান সন্ততীর সংখ্যা ১০২। তার নাতি-নাতনি রয়েছেন ৫৭৮ জন। এই নিয়েই তার ভরা সংসার।

পূর্ব উগান্ডার বুতালিজা রাজ্যের বাগিসা গ্রামে বাস মুসা হাসাহ্যার। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তার একটি ভিডিও। যেখানে তাকে ‘দ্য পারসন হু প্রোডিউসড দ্য মোস্ট চিল্ড্রেন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

- Advertisement -

তবে বিষয়টি শুনতে মজার লাগলেও খুব একটা মজার নয়। এত জন ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেওয়া সহজ কথা নয়। পেশায় গবাদী পশু ব্যবসায়ী ছিলেন মুসা, কসাইয়ের কাজ করেছেন। তাই জীবনের প্রথম দিকে বেশ ভালই পসার করেছিলেন তিনি। এমনিতেই বাগিসা গ্রাম প্রত্যন্ত এক অঞ্চল, সেখানে এত ভাল জোয়ান পাত্র আর কোথায় পাওয়া যায়? তাই নিজের কন্যার সঙ্গে বিয়ে দিতেও স্বাছন্দ্য বোধ করতেন কন্যা দায়গ্রস্থ পিতারা।

১৯৭২ সালে ১৭ বছর বয়সে প্রথম বিয়ের পিঁড়িতে বসেন মুসা। বিয়ের এক বছর পরে জন্ম নেয় তার প্রথম সন্তান স্যান্ড্রা নাবওয়াইর। বর্তমানে তার সন্তানদের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তার সবচেয়ে কনিষ্ঠ স্ত্রীর বয়স তার বয়সের অর্ধেক, ৩৫ বছর।

বিশাল এই পরিবার একদিকে যেমন আশির্বাদ, অন্যদিকে তেমনই চিন্তার কারণ। এত লোকের ভরণপোষণ করা সহজ কাজ নয়। মুসা জানান, তার সব ছেলেমেয়ের নাম মনে রাখতে পারেন না নিজে। তিনি বলেন, আমি কেবল আমার প্রথম এবং শেষ সন্তান ও কয়েকজনের নাম মনে করতে পারি। সকলকে নয়। বৃদ্ধ আরও জানান, তার স্ত্রীরা তাকে তার সন্তানদের চিনতে সাহায্য করেন।

এত বড় পরিবার হওয়ার কারণে আর্থিক অনটনে ভুগতে হয় তাকে। ভাঙা ছাদ, মাটির ঘর আর দু একর জমি এই তাঁদের সম্বল। মুসার তৃতীয় স্ত্রী জাবিনা বলেন, আমাদের শিশুদের একবেলা খাবার খাইয়ে রাখতে হয়। খুব ভাল দিন গেলে দু’বেলা জোটে না। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে নাতি-নাতনিরা প্রতিবেশীদের কাজ করে সেই টাকায় জল আর জ্বালানি কাঠ জোগাড় করে আনে।

কিছু ধর্মীয় মতে উগান্ডায় বহু বিবাহ বেআইনি না হলেও, ১৯৯৫ থেকে বাল্য বিবাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। একটা সময় ভাল আয় ছিল মুসার। তার সঙ্গে গায়ে ছুটছে জোয়ান রক্ত, তাই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বংশ বিস্তার করে গিয়েছেন। এখন নিজের শরীর ভাল নয়, রোজগার বন্ধ। পরিবারের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো সাধারণ প্রয়োজন মেটাতেই অক্ষম। আক্ষেপ করে মুসা জানান, এখন বংশ বিস্তার আটকাতে তার স্ত্রীয়েরা গর্ভ নিরোধক ওষুধ খান।

অভাবে পড়ে ইতিমধ্যেই দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। জায়গার অভাবে আরও ৩ স্ত্রী অন্যত্র শহরে বসবাস করেন। বহুগামিতার কারণে অসন্তুষ্ট তৃতীয় স্ত্রী জাবিনাও। তবে মুসার পরিবারকে দেখতে দূর থেকে ছুটে আসেন অনেক পর্যটকরা। আর তার পরিবারের বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেই তিনি বলেন, ওঁরা সবাই আমাকে ভালবাসে, দেখুন সবাই কত খুশি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles