9 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ১৪, ২০২৫

মদ্যপ অবস্থায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার অশ্লীল নৃত্য ভাইরাল, একজন বললেন ‘আসামি ধরার কৌশল’

মদ্যপ অবস্থায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার অশ্লীল নৃত্য ভাইরাল, একজন বললেন ‘আসামি ধরার কৌশল’
অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা

মাদারীপুরের রাজৈর থানা পুলিশের দুই এএসআইয়ের নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্যের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজৈর থানায় কর্মরত ওই দুই এএসআইয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের কয়েক নেতাও। এতে সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো জেলাজুড়ে।

বিষয়টি জানাজানির পর তাদের প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের দাবি, শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। আর অভিযুক্তদের দাবি, এটা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

- Advertisement -

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার দুই এএসআই হাদিবুর রহমান ও স্বপন অধিকারীর চারটি ভিডিও ক্লিপ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, তারা একটি টিনশেড ঘরে মদ্যপ অবস্থায় একাধিক নারীকে নিয়ে নাচানাচি করছেন। চুমু খেতেও দেখা গেছে। সিগারেট ও গানের তালে তালে উল্লাস করছেন। আবার কখনও যুবলীগের কয়েক নেতাও নাচের তাল দিচ্ছেন। সে কক্ষের খাটে বসে তাদের সঙ্গে নারীদের নৃত্য উপভোগ করছেন রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের নটাখোলা জগদীসের বাড়ি ও আনন্দপুরের ভবত শেরের বাড়ির সঙ্গে গ্যারেজে মাঝেমধ্যেই আসর বসান বখাটেরা। যেখানে মদ, গাঁজাসহ অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সময়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকজন পলাতক যুবলীগ নেতাও সেখানে অশ্লীল কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এমন কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ।

এ বিষয়ে রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করেন। কোনও অবস্থায়ই আইনের বাইরে কিছু করতে পারেন না। যদি অন্যায় বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করেন, তার সেই কাজের দায়ভার পুলিশ বিভাগ নেবে না। অভিযুক্তদের বিষয় জানতে পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। তিনি তাদের ক্লোজড করেছেন।’

তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ভিন্ন কথা বললেন অভিযুক্ত দুই এএসআই। অভিযুক্ত স্বপন অধিকারী দাবি করেন, ‘আমি বিনদাস মানুষ, মাঝেমধ্যে একটু আমোদ ফুর্তি করি। অনেক সময় আসামি ধরতে নানা কৌশল নিতে হয়। এতে যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী। আর অন্যায় না হলে কিছু করার নেই।’

অন্যজন হাদিবুর রহমান দাবি করেন, ‘আমার জন্ম দিন উপলক্ষে কিছু দিন আগে বন্ধু-বান্ধব মিলে একটু আনন্দ-ফুর্তি করেছি। কিন্তু সেটা ভিডিও করে কে ভাইরাল করলো, বিষয়টি বুঝে আসছে না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও হতে পারে। তবে আমি ভুল শিকার করছি, এরকম কাজ আর কখনও করবো না।’

যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনের সঙ্গে ওই আসরে মাতলামি করেছেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাদিবুর রহমান দাবি করেন, ‘কে কে ছিল, সেটা জানি না। আমার বন্ধুরা মিলে এমন আয়োজন করেছিল, তাই সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শরীরে কোনও ইউনিফর্ম ছিল না। সবারই কম বেশি আনন্দ-ফুর্তি করার অধিকার আছে।’

অন্যদিকে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার সাইফুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। ইতিমধ্যে যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনোভাবেই এটা কোন পুলিশের সদস্য করতে পারে না। তাৎক্ষণিক অভিযুক্তদের পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। অচিরেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিভাগীয় মামলা করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।’

অভিযুক্ত এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্য, আসামিদের গ্রেফতার না করে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে সহকর্মীদের মধ্যেও। তবে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি অনেকেই।

আর যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার পরিবার এসব বিষয় কথা বলতে রাজি নয়।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles