
নারী কেলেঙ্কারিসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে কুড়িগ্রাম কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আইনুল হকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে একটি অডিও ক্লিপ। এতে ভুক্তভোগী নারীর জবানিতে উঠে এসেছে অধ্যক্ষের অপকর্মের চিত্র। ফাঁস হওয়া সেই অডিও ক্লিপটি এসেছে এ প্রতিনিধির হাতে।
সেই অডিওতে ভুক্তভোগী নারী দাবি করেন, তার সঙ্গে নানা অপকর্ম করেছেন অধ্যক্ষ আইনুল।
ফাঁস হওয়া ওই অডিওতে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের ৩ জন মিলে কুড়িগ্রাম টিটিসিতে চাকরি করতাম। আমি হোস্টেলে কাজ করতাম। অধ্যক্ষ স্যার মাঝে মাঝে ফোন করে আমার নানারকম খোঁজ নিতেন।
যখন তিনি কোয়ার্টারে থাকতেন তখন, সময়ে-অসময়ে কল দিতেন তিনি। রাত ১২টা নাই, ১টা নাই, ২টা নাই—যখন-তখন কল দিতেন। যখন লালমনিহাটে থাকতেন তখন কল করতেন না।
এতে তিনি আরো বলেন, ‘তখন বাচ্চা পেটে ছিল।
প্রিন্সিপাল স্যার বলেন, তুমি যা চাও তোমাকে তাই দেবো। তুমি যদি স্বর্গের চাঁদটা চাও, সেটাও তোমার হাতে এনে দেবো। কিন্তু এ কথাটা বলা যাবে না। তুমি মনে করো তুমি আমার সাথে রিলেশন করতেছ। আমরা একে অপরকে ভালোবাসবো।
’
একসময় তিনি (অধ্যক্ষ আইনুল) কোয়ার্টারে তার মায়ের দেখাশোনার জন্য আমাকে রেখে দিলেন জানিয়ে ওই নারী বলেন, ‘তিনি বলতেন- নাশতা বানিয়ে দাও, দিতাম। বলতেন পাশে বসো। ওনার ছেলে-মেয়ে সবাই লালমনিরহাটে থাকত। যখন-তখন এটা-সেটা আবদার করতেন। আমার স্বামীর সঙ্গেই আমাকে থাকতে দিতেন না—বলতেন, আমার মায়ের সঙ্গেই থাকো। তোমাকে চাকরি ফলো করতে হবে। হাজব্যান্ড বেশি নাকি চাকরি বেশি? এভাবে হুমকি দিতেন। তিন মাস স্বামীর কাছে যেতে দেননি।’
তিনি বলেন, ‘একদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি কল দিয়ে বললেন, তুমি কোথায়? আমি বললাম, শ্বশুরবাড়িতে। তখন তিনি বললেন, যদি তুমি চাকরি করতে চাও তাহলে এখনই চলে আসো কোয়ার্টারে। তখন আমি বললাম, পারব না আপনার কথা শুনতে। তিনি বললেন, কেন শুনবা না? শুনতে হবে তোমাকে। উনি নানা জেদ-জুলুম করার পর আমাকে হুমকি দিলেন। তারপর ওনার সঙ্গে আমার ভুলটা হলো।’
অধ্যক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তার সাবেক স্বামী অধ্যক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘অধ্যক্ষের সঙ্গে তার অনেক সম্পর্ক ছিল। আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। অনেক সাংবাদিক আসছিল, কিন্তু এলাকার লোক আমাকে কিছু বলতে দেয়নি। তখন যদি আমি বলতাম তখনই তার ব্যবস্থা হইত।’
অডিওটির বিষয়ে জানতে কুড়িগ্রাম কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র (টিটিসি)-তে গেলে দেখা যায়—পাশে প্রশিক্ষণ চলছে ঠিকই কিন্তু অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝোলানো। পরে একাধিকবার কুড়িগ্রাম টিটিসির অধ্যক্ষ প্রকৌ. মো. আইনুল হক ফোন দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনে অডিওর বিষয়টি জানিয়ে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব মেলেনি।