-5.5 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলা

নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলা
নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলা

জানুয়ারি ২৬ রোববার। চমৎকার একটা দিন আজ। নেই কোনো শীতের বাড়াবাড়ি। নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলা। আগামীকাল থেকে আবার পুরোদমে সাপ্তাহিক কাজকর্ম শুরু হবে আমার। তবে সপ্তাহের ছুটির দিন বলে যে দুইদিন সে দুইদিনেও আসলে আমাদের কারোর ছুটি থাকে না। বাচ্চাদেরও না। কারণ সপ্তাহে পাঁচদিন তারা যায় স্কুলে। আর ছুটির দুইদিন শনিবার ও রবিবার যায় তারা মাদ্রাসায় ফুল টাইম।

আমিমা সবে সাড়ে পাঁচ বছরে পড়ল। সেও সপ্তাহে পাঁচদিন ফুল টাইম স্কুল ও মাদ্রাসায় যাচ্ছে। আমিই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আবহাওয়া যেমনই থাকুক it doesn’t matter. তারা সারা বছর উইকেন্ডে মাদ্রাতে যাবেই। তো ছোট্ট আমিমাও হিজাব পরে যাচ্ছে মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় শুধু আরবি পড়ানো হয় না। ইসলামিক শিক্ষা, হাদিস, কুইজ সব থাকে বাচ্চাদের শেখানোর জন্য।

- Advertisement -

আমরা পশ্চিমা বিশ্বে থাকি। ইচ্ছে করলেই কতো কী করে বেড়ানো যায়। কারোর কোনো কিছুতে বাঁধা নেই। চৌকস সব লাইফ স্টাইলে গা ভাসানো মোটেও তো ব্যাপার না। হাত বাড়ালেই ম**দ, পা বাড়ালেই নাইট ক্লাব, মন চাইলেই পর*কীয়া কোনো কিছুর অভাব হবে না।  আনন্দ-বিনোদনের জন্য রয়েছে অজস্র সুযোগ। এদেশে যে যেরকম পারে পোশাক পরতে পারে তাতে বিন্দুমাত্র কারোর বাঁধা নেই, সমস্যা নেই। কেউ কারোর দিকে তাকাবেও না। কেউ কোনো কুনজরে তাকালে তার নামে কেস হয়ে যাবে। এত কিছু সুযোগ রয়েছে তাই সেগুলোয় গা ভাসিয়ে দিতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই। ওসব না করে বেড়ালে নিজেকে সমাজের যোগ্য মনে করা যাবে না সেটা মোটেও না।

মোট কথা হলো নিজের জীবন ধারণ কেমন হবে সেটা নিজের সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করে। কোন জীবন বেছে নেব সেটা নিজের ওপরেই নির্ভর করবে। কেউ কাউকে জোর করে নীতিভ্রষ্ট করাতে পারে না।

আপনার সমাজে যোগ্যতার মাপকাঠি হলো আপনি সুন্দর একটা জীবন ধারণের মাধ্যমে সমাজকে আপনি কীভাবে সাহায্য করতে পারেন এটাই। আপনার সৌন্দর্যের চাবিকাঠি হলো আপনার ঝকঝকে একটা চরিত্র। যে চরিত্রের মাধ্যমে আপনি বেহায়াপনা থেকে মুক্ত থাকবেন, কাউকে উপকার না করতে পারেন ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না, মানুষের ওপর মানবিকতা বজায় থাকবে, অসৎ ইনকাম বা মানুষকে ধোঁকা দিয়ে অর্থ না নেওয়া ইত্যাদি থাকতে হবে আপনার চরিত্রে।

আপনি নিজেকে স্মার্ট করতে ক্যারিয়ারে যুক্ত করতে পারেন নানা রকম কোয়ালিটি। সেগুলো কী হতে পারে? গাড়ি চালানো শিখতে পারেন, আপনার ভেতরের যে কোনো সুপ্ত প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আপনি যেখানে চাকরি করেন সেখানে আপনার সর্বোচ্চ মেধা খাটান কীভাবে আপনি নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে পারেন। আপনি বিজনেস করলে চেষ্টা করুন কীভাবে একজন ইলন মাস্ক হওয়া যায়। অতদূর না হলেও আপনি নিজেই কোনো কিছুর উদ্যোক্তা এটাই যথেষ্ট।

তবে মনে রাখতে হবে এসবের কোনো কিছুর জন্য নিজের ইজ্জত নিলামে দেওয়া যাবে না।  মানে আপনি যা খুশি বা যেমনভাবে পারেন নিজেকে উন্মুক্ত করতে পারেন না। পৃথিবীর এখনো অনেক নজির রয়েছে ভালোভাবে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার উদাহরণ।

মনে রাখতে হবে পৃথিবীর সবার জন্য একটা কথা চিরন্তন সত্য। সেটা হলো ম*রণ। ম*রণের পর আপনার পার্থিব ভালো কাজকর্ম আপনাকে স্মরণ করবে, খারাপ কাজ না। তাছাড়া জীবিতাবস্থার কথাই ধরুন। একটুখানি বয়স পেরুলে কী আর কারোর কোনো গুরুত্ব থাকে? তা সে যৌবনে যতই বাহাদূর থাকুক না কেন।

আমি আঠারো বছর ধরে কানাডায় বাস করছি। ফুলটাইম কাজ করতেছি আঠারো বছর ধরে। সঙ্গে বিগ টাইম পড়াশোনা শেষ করেছি। আমি শুধুমাত্র কাজে যাই আর কাজ শেষে বাড়ি ফিরি। সংসারের যাবতীয় কাজ করি, বাজার করি, বাচ্চাদের জন্য যা করার দরকার করি, স্কুলে ড্রপ-অপ, পিক-আপ করেছি ও করি সময় সুযোগ মতো। বাসাতেই রান্না করি সবাই খাই।

কখনো কোনো পার্টিতে যাওয়া, বিউটি পার্লারে গিয়ে মেকআপ নেওয়া চুলের স্টাইল করানো, কোনো মেকআপ প্রসাধনী কেনা কোনো কিছুই করি নি।  আমি আঠারো বছর আগে এসেছিলাম ইয়াশা সাগরের মতো লম্বা আর ছিপছিপে, এখনো তার থেকে তেমন কোনো ব্যক্তিক্রম ঘটে নি। এখনো আমার কেউ কেউ মেয়ে কলিগ বলে “you look like teenager ” এটা বলে আমি যেটা বোঝাতে চাচ্ছি ইচ্ছে করলেই আমিও নানা রকম উন্মোদনায় নিজেকে ভাসিয়ে দিতে পারতাম কিন্তু সেদিকে পা বাড়াই নি। আমিও তো বছরে অনেকেই  ইনকাম করি। যা আমি যেকোনো মজ মাস্তিতে উড়িয়ে দিতে পারতাম। বরং নিজেকে অনেক বেশি সংরক্ষিত করেছি।

ইচ্ছে করলেই তো  পুরুষ বন্ধু জোটাতে পারতাম। একজনকেও তো চিনি না। চেনার চেষ্টাও তো করি নি। যেখানে চারিদিকে পরকীয়ার ছোবলে জর্জরিত সমাজ।

আমার কোনো মেয়ে বন্ধুও নেই। আমার মূলত সমস্ত কাজকর্ম সংসার কেন্দ্রিক।

আমি যেটা বোঝাইতে চেয়েছি সেটা হলো, আপনি অনেক সুন্দর বা সুন্দরী, আপনি অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পারেন বা আপনার আরো অনেক কিছু যোগ্যতা রয়েছে সেসব প্রদর্শন করে সমাজে আপনি নোংরামি করে বেড়াবেন এটা মোটেও কাম্য নয়। মার্জিতভাবে অনেক কিছু করা যায়।

যাই হোক এভাবেই আপেল কেটে ফুল বানিয়েছি। আমিমা ও মহিমাকে আকর্ষণ করানোর জন্য। আপেল, oat ও দুধ দিয়ে ব্লেন্ড করে smoothie করে দিয়েছি। তারা খেয়ে মাদ্রাসায় গেছে।

আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।

 

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles