কোভিড পরবর্তী বিশ্বে ফিটনেস নিয়ে সচেতন কমবেশি সবাই। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ক্যালরি ঝরানো— এগুলোই এখন সুস্থ থাকার অন্যতম লক্ষণ। অনেকটা পথ হাঁটার পর, আমরা একসময় টের পায় এই পথ ভুল। হাঁটা শরীরের পক্ষে ভালো, তবে বুঝে-শুনে না হাঁটলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু হাঁটলেই কি সুস্থ থাকা যায়?
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হাঁটলে হার্টের সমস্যা এড়ানো যায়। কিন্তু সেই হাঁটায় যাতে ঘাম ঝরে, সে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটা হয় না অনেকেরই। তাছাড়া, হাঁটার থেকে অনেক বেশি উপকারী সিঁড়ি ভাঙা। অথচ, আজকাল বেশিরভাগ মানুষই লিফ্ট ব্যবহার করেন উপরে ওঠার জন্য। এটাই কিন্তু ভুল করছেন। যখন হাঁটার সুযোগ নেই, তখন সিঁড়ি ওঠানামা করেই রোগের ঝুঁকি কমান।
‘ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অ্যাংলিয়া অ্যান্ড নরফোক’ এবং ব্রিটেনের ‘নরউইচ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’-এর করা একটি গবেষণা বলছে, সিঁড়ি ভাঙলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমে। প্রতিদিন ১৫ স্টেপ হাঁটার সমান ৫ বার সিঁড়ি ওঠানামা করা। এতেও হার্টের সমস্যা প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। প্রতিদিন সিঁড়ি ভাঙলে করোনারি আর্টারি ডিজিজ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যা প্রায় ২৪ শতাংশ কমে যায়। তার সঙ্গে ওবেসিটি, কোলেস্টেরলের মতো ক্রনিক অসুখের ঝুঁকিও কমে। তবে, কমপক্ষে ১০-১৫ বার একতলা সিঁড়ি ওঠানামা করতে হবে।
সিঁড়িতে ওঠানামার উপকারিতা
প্রতিদিন সিঁড়ি ওঠানামা করলে পায়ের পেশির জোর বাড়ে। গোটা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। হার্ট বিট বেড়ে যায়, এতেই কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমে যায়। পাশাপাশি ওজন কমে। অর্থাৎ, ওজন কমানোর জন্যও উপকারী সিঁড়ি ভাঙা।
ফিজিশিয়ান ডা. শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘ওজন কমানোর জন্য বা ক্যালরি খরচের জন্য এমন এক্সারসাইজ করতে হবে, যাতে ঘাম হয়, হার্ট বিট বেড়ে যায়।’
ঠিকমতো সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে ঘাম ঝরতে পারে। তাতে হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে বাধ্য। কোনো রকম শরীরচর্চা ছাড়াই যদি সিঁড়ি ওঠানামা করেন, তাতেই শরীরের অর্ধেক রোগ কমে যাবে।