গত পোস্টে লিখেছিলাম ট্রুডো 25% শুল্ক ঘোষণার পর ট্রাম্প ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। ফেব্রুয়ারি ৩ তারিখে ট্রাম্প ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলেন ফোনে। তখন তিনি বলেছে কানাডার পণ্যের ওপরে 25% শুল্ক আরোপ আমি এক মাসের জন্য স্থগিত করতেছি। তখন ট্রুডোও সিদ্ধান্ত নিন যে তিনিও এক মাসের জন্য স্থগিত রাখবেন। মানে বুঝেঝেন তো? যেমন কুকুর তেমন মুগুর।
ট্রাম্পের ধারণা ছিল তিনি যা খুশি তাই কানাডাকে নিয়ে করবেন, আর কানাডা সবকিছু মেনে নিয়ে দাসত্ব করার জন্য অঙ্গীকৃত হবে। না। সেটা হচ্ছে না।
এই যে ধরেন ট্রুডোর আর একমাসের মতো বাকি আছে। টা-টা বলে বাড়ি চলে যাবেন। এই কয়দিন তো তিনি যেমন-তেমনভাবে কাটিয়ে দিয়ে চলে যেতে পারতেন। তা করেন নি। বলেছেন ট্রাম্পের মোকাবেলায় সবকিছু এখন অন দ্যা টেবল। হিরোর মতো কাজ করেছেন।
কিন্তু ট্রাম্প তো একজন জাত ছেচড়া। বিশ্ব যে এখন কোনো পাগলের ঘোরে আছে আল্লাহ! তিনি তো কানাডাকে 51 state বানাতে চেয়েছিলেন। সেটা করতে না পেরে রাগে 25% শুল্ক আরোপ করেছেন। যদিও তিনি বলেছেন এটা তিনি করেছেন কানাডা থেকে আমেরিকার বোর্ডার দিয়ে অবৈধ মানুষ ও ড্রা*গ আসতেছে বলে। যদিও কানাডার রেকর্ড বলেছে সেটা 1% এর কম।
যাই হোক তিনি কী করেছেন শোনেন। ট্রুডোর সঙ্গে গতকাল কথা বলে 25% শুল্ক একমাস স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমি দেখতে চাই ট্রুডো কীভাবে শুল্ক আরোপ বন্ধ করে। শুধু তাই বলেন নি ট্রাম্প। আরো বলেছেন, আমি তো কানাডাকে 51 state বানাতে চাই। এটা বানালে কোনো শুল্ক থাকবে না। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকাকে আমি কানাডার সঙ্গে মেলাতে চাই ওদেশের ভালো হেল্থকেয়ার সিস্টেমের কারণে।
যাই হোক, কানাডার সাধারণ জনগণ এখন একদিকে যেমন চিন্তিত জীবনধারণের খরচ বেড়ে যাবে, আবার অন্যদিকে সবাই আমেরিকার পণ্য বর্জনে কঠোর হয়েছেন। সব গ্রোসারি স্টোর, অন্যান্য স্টোরে মেড ইন কানাডা বা মেক্সিকোর পণ্যের লেভেল ফোকাস করা হচ্ছে। কানাডার প্রত্যেকটা প্রভিন্স স্ব-স্ব পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফেডারেল সরকারের সঙ্গে একমত হয়ে সবগুলো প্রভিন্সিয়াল সরকার দল করে নাম দিয়েছেন ‘কানাডা টিম’। শুধুমাত্র Alberta’s যে প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল স্মিথ তিনি এই টিমে যোগ দেন নি। তার রাজ্যে তেল আছে তো। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে এমনভাবে যুদ্ধ করা যাবে না।
তাই তিনি তেল মারতে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানেও গিয়েছিলেন। ট্রুডো যাওয়ার কথা মাথাতেই আনেন নি। ট্রাম্প ড্যানিয়েলকে পাত্তাই দেন নি। একমাত্র এই মহিলা একপাশে, অন্যদিকে কানাডার সবাই।
এখন আরেকজন হিরোর কথা বলি শোনেন। তিনি হলেন অন্টারিও’র প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড। এই মানুষটার চরিত্র ভীষণ স্ট্রেট ফরোয়ার্ড। তিনিই অনেক কিছুই পদক্ষেপ নিয়েছেন ইতোমধ্যে। তারমধ্যে একটা হলো, অন্টারিও’র সকল LCBO (ম*দে*র দোকান) থেকে আমেরিকার সকল ম*দ নামিয়ে ফেলতে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কেউ যেন অর্ডার না করতে পারে যেন সেই জন্য তিনি আমেরিকার ম*দ ক্যাটালগ থেকে বাদ দিয়েছেন।
কিন্তু ট্রাম্প গতকাল একমাস স্থগিত করার কারণে ফোর্ডও একমাস বন্ধ রেখেছেন। ট্রাম্প যখনই শুরু করবেন, তিনিও আবার সব নামিয়ে ফেলবেন।
শুধু তাই না। ডাগ ফোর্ড আরো কী বলেছেন শোনেন। তাকে বলা হয় লিডার অফ অন্টারিও। আমেরিকান কোম্পানিকে banned করে দেবেন প্রভিন্সিয়াল গভার্মেন্টের কন্টাক্ট থেকে যতক্ষণ না ট্রাম্প শুল্ক তুলে নেয়।
এই সাহসী নেতা আরো বলেছেন, তাঁর সরকার ইলন মাস্কের satellite internet কোম্পানি starlink এর সঙ্গে C$100m ($68m;£55.1) কন্টাক্ট ‘ripping up’ করে দেবেন। এই ইলন মাস্ক ট্রাম্পের নম্বর ওয়ান দোসর। যদিও ট্রাম্প ইলনের কী যেন একটা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও নাকি দিয়েছেন শুনেছি।
এদিকে ট্রাম্প যাকে মন চাচ্ছে তার ঘাড়ে 25% শুল্ক চাপিয়ে দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কাকে কাকে এই হুমকি দিয়েছেন তিনি শোনেন।
কানাডা, মেক্সিকো, চায়না, কলম্বিয়ায় আর গতকালকে ঘোষণা দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরে। আরো একটা দেশেও দিয়েছেন 25% শুল্ক। সে দেশ দেখলাম ট্রাম্পের ছবি আগু*নে পু*ড়াচ্ছে।
পানামা খাল থেকে গ্রিনল্যান্ড, কানাডা থেকে মেক্সিকো সবকিছুই তিনি নিতে চান। আবার বলেছেন গা*জা থেকে জনগণ নিয়ে তিনি ইজিপ্টে নিয়ে রাখবেন।
দেখা যাক কী হয়!
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।
টরন্টো, কানাডা