-5.5 C
Toronto
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

কানাডার জব ইন্টারভিউ!

কানাডার জব ইন্টারভিউ!
কানাডার জব ইন্টারভিউ

কানাডা আমি টোটাল যে কয়টা চাকরি ইন্টারভিউ দিয়েছি তারমধ্যে তিনটা লং লাইম চাকরি করেছি ও করছি সেই তিনটাই প্রধান। কারণ এই তিনটা চাকরিতে আমাকে হায়ার করা হয়েছে।

#1 Building superintendent: কানাডায় আসার পর আমরা যে বিল্ডিংটায় উঠেছিলাম পরের দিনই আমাদের দুইজনকে বিল্ডিং building superintendent এর জব অফার দেওয়া হয়। আমরা রাজি হই। তার সপ্তাহখানিক পরে ঐ বিল্ডিংয়ের প্রোপার্টি ম্যানেজার আমাদের ইন্টারভিউ নেন।

- Advertisement -

জিজ্ঞেস করে আমাদের কী কী স্কিল আছে বা আমরা কী করতে পারি। সেসময় আমরা নতুন মানে ব্রান্ড নিউ। আসার এক সপ্তাহের মধ্যে। আমরা আমাদের যোগ্যতার কথা জানালাম। তিনিও আমাদের জানালেন যেহেতু  এই চাকরিতে আমরা নতুন, আমাদেরকে শিখিয়ে নেওয়া হবে।

সুতরাং এই চাকরিতে ইন্টারভিউ এতোটা ফরমাল হয় নি আরকি। আমরা চাকরি পেলাম। কাজ করতে করতে অনেক কিছু শিখে ফেললাম। এমনকি আমি যেসব স্কিল শিখেছি তা দিয়ে এখনো আমি অনেক কিছু করতে পারি। যে কোনো Carpentry, এটা-ওটা ঠিক করা অনেক কিছু বলা যায় আমি নিজেই করি। ঐ যে বিল্ডিংয়ে কাজ করার সময় শিখেছে।

এ চাকরি করেছিলাম দশ মাসের মতো।

#2 Early childhood assistant : বিল্ডিংয়ের চাকরি ছেড়ে early childhood education পড়তে যাই। পড়া চলাকালীন চাকরির জন্য অনলাইনে আবেদন করি। আমাকে ডাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য। যেহেতু  আমি সে সময় পড়তেছিলাম তাই ECA পদের জন্য ইন্টারভিউ। ECE ডিপ্লোমা না থাকলে ECE পদে চাকরি হবে না।

তারপর ইন্টারভিউয়ে গেলাম। একজন মহিলা ও একজন পুরুষ আমাকে ইন্টারভিউ নিলেন। জিজ্ঞেস করলে আমি কী পারি, আমার কী দক্ষতা আছে, কী দূর্বলতা আছে, emergency অবস্থায় কী করতে হবে বাচ্চাদের নিয়ে আরকি ইত্যাদি জিজ্ঞেস করলেন। মোটামুটি উত্তর দিলাম। তারপর তারা বললেন, “We hired you.”

পরে জানতে পারলাম ঐ দুইজন ঐ ডেকেয়ারের মালিক ও তারা স্বামী-স্ত্রী। মজার ব্যাপার তারা বাঙালি। কিন্তু হায়ার করার পরে জেনেছি। আপা বলে ডাকতাম ওনাকে। আপার সঙ্গে অত্যন্ত ভালো সম্পর্কে হয়ে যায়। পরে উনি জানালেন, ‘তোমাকে দেখেই আমরা পছন্দ করেছিলাম।’ আমি তখন ভেরি ইয়াং ছিলাম। তারপর লুকিংয়ে লাগত আরো ইয়াং। ড্রেস-আপ, সবকিছু মিলিয়ে তারা পছন্দ করেছিলেন।

ঐ চাকরি করেছিলাম দশ বছর। assistant থেকে সেন্টার সুপারভাইজার পর্যন্ত । তারপর ২০১৮ সালে চাকরি ছেড়ে দিই।

#3 Register Early childhood educator: ঐ চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর কয়েক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। কেউ কেউ হায়ার করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি জয়েন করি নি।

বর্তমানে যে চাকরিটা করছি সেখান থেকে তখন ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক আসে। এই কোম্পানিটা অনেক ভালো। Non-profit  অর্গানাইজেশন। বেতন ও বেনিফিট অনেক ভালো।

আমি ইন্টারভিউ দিতে গেলাম। কোম্পানির দুইজন কানাডিয়ান মহিলা ম্যানেজার প্রায় এক ঘণ্টার বেশি আমাকে ইন্টারভিউ নিলেন। তাদের কাছে লিখিত কশচেন ছিল। আমি ভালো মতো উত্তর দিতে পেরেছিলাম আল্লাহর রহমতে।

যেহেতু  এটা ECE চাকরির ইন্টারভিউ তাই এই ফিল্ড রিলেটেড কশচেন ছিল। মিনিস্ট্রির requirements সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, কিছু সিনারিও উল্লেখ করে বললেন, কী করতে হবে বলো। তারপর যা জিজ্ঞেস করলেন সেটা হলো, তুমি কিছু leadership এর কথা বলো যা তুমি আগের চাকরিতে করেছ।

আমি তো বলে দিলাম খুব করে। আমি ঐ সেন্টারে দুইটা বিগ ইভেন্ট পরিচালনা করেছি। একশোর বেশি প্যারেন্টস, ভিজিটর নিয়ে বারবিকিউ পার্টি করেছিলাম যার প্রত্যেক বিষয় আমিই অর্গানাইজ করেছি। বিশাল আকারে আরকি। তারপর বাচ্চাদের নিয়ে টরন্টোর মধ্যে ও বাইরে স্কুল বাসে করে ফিল্ড ট্রিপে নিয়ে গেছি ইত্যাদি। তখন সুপারভাইজার ছিলাম সেন্টারে। তারা তো এসব শুনে খুশি হলেন ও আমাকে হায়ার করলেন ECE হিসেবে। আগের চাকরির সুপারভাইজারের চেয়ে বেতন বেশি।

এদেশে চাকরির ইন্টারভিউয়ে জিজ্ঞেস করে ‘তোমার নিজের সম্পর্কে কিছু বলো।’ তার মানে এই নয় যে বলা শুরু করতে হবে আমি করিম। বাবার নাম রহিম। ছয় ভাইবোন। তিনজনের বিয়ে হয়ে গেছে ইত্যাদি। এসব আপনার কাছ থেকে তারা শুনতে চাচ্ছে না।

নিজের সম্পর্কে বলো মানে আপনার দক্ষতা। আপনি কী করতে পারেন। কী পছন্দ করেন। আপনি punctual কিনা। কীভাবে সমস্যা সমাধান করতে পারেন ইত্যাদি। Extra কোয়ালিটি আছে কিনা। কতটুকু  দায়িত্বশীল। Flexible আছেন কিনা ইত্যাদি।

ইন্টারভিউয়ে টিকতে পারা একটা দক্ষতা।

আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।

 

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles