
ধর্ষণের অভিযোগে ক্যান্টনমেন্ট থানায় করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুন জামিন পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। জানা গেছে, আজ এ মামলার অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এ জন্য আসামি প্রিন্স মামুন আদালতে উপস্থিত হয়ে তার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এদিকে মামুনের জামিনের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে দেখা গেছে লায়লা আখতারকে। যেখানে তিনি জানান, মামুনের ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চান তিনি। এমনকী মামুনের সঙ্গে ভবিষ্যতে আপোষের কোনো সুযোগ নেই।
লায়লা বলেন, ‘ন্যায়বিচার চাওয়ার কারণেই আজকে আমি আদালতে।
এটা স্থাপন করতে চাই, মানুষ যত সেলিব্রেটি হোক না কেন, যত টাকা পয়সা থাকুক না কেন, সে তার প্রভাব ফেলে কোনো মেয়ের জীবন যেন নষ্ট করতে না পারে ইন ফিউচারে। যেমন আমরা অনেক নায়কের ক্ষেত্রে দেখেছি যে তারা একটা সম্পর্ক করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে অস্বীকার করে গেছেন। সেরকম আমার মামলাটাও যেন উদাহরণ হয়ে থাকে কেউ যেন এই অন্যায়টা আর করতে না পারে। যখন ইচ্ছা সম্পর্ক করবো, প্রকাশ্যে আনবো; কিন্তু স্বার্থ হাসিল হয়ে গেলে সেই সম্পর্ক অস্বীকার করবো।
তার ফ্যান ফলোয়ারদের মাঝে যেন ভুল মেসেজ না যায়। তার ফ্যানরা যেন এসব কাজে উদ্ভুদ্ব না হয়। অন্যায় আসলে সবকিছুই অন্যায়।’
প্রিন্স মামুনকে আর গ্রহণ করবেন কিনা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লায়লা বলেন, ‘আমাদের আপসের আর কোনো সম্ভাবনা নাই। যেহেতু এতো বছরের আমাদের একটা ভাল বন্ডিংকে সে ডিনাই করে দিয়েছে, তার স্বার্থের জন্য, তো সেখানে আসলে আপসের কোনো সুযোগ নাই।
আমি চাই যে এটার বিচার হোক। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।’
এর আগে ৯ জুন প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন লায়লা আখতার। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ১১ জুন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন ও রিমান্ড উভয় নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে গত ১ জুলাই তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। তদন্ত শেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান আদালতে এ অভিযোগপত্র দেন। এতে মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামি প্রিন্স মামুন একজন টিকটকার। বিভিন্ন ফেসবুক আইডিসহ সামাজিক মাধ্যমে টিকটকার হিসেবে পরিচিতি পান। অপরদিকে বাদী লায়লা আখতার নিজেও ফেসবুকে অত্যন্ত পরিচিত মুখ। তিনি বিবাহিত। তার স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ফ্ল্যাটে সন্তানদের নিয়ে একাই থাকেন। পরে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিত্তিতেই পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তার সঙ্গে মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন।
তার পর থেকে ২০২২ সালের প্রথম দিকে একত্রে চলাফেরা, পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক গভীর করতে উভয়ে একত্রে লায়লার বাসায় থাকা শুরু করেন। তাদের মধ্যে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লায়লার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। তারা নেপালে একত্রে ভ্রমণ করেন। সেখানেও তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। তাদের সম্পর্ক ঘনীভূত হওয়ায় মামুন তার আইডি, এনআইডি, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে লায়লার ঠিকানা ব্যবহার করেন। তাকে বিয়ে করবেন বলে বিশ্বাস স্থাপন করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে একই ফ্ল্যাটে একত্রে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকেন এবং একাধিকবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।