
ঘটনাটি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসারের। সেখানে নিজের মাকে কামড়ে, চুল টেনে, চড়-থাপ্পড় ও মারধর করছেন মেয়ে- এমন হৃদয়বিদারক একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ওই নারীকে বলতে শোনা যায়, তিনি মায়ের রক্ত পান করবেন।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর, ওই নারীর ভাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তার বোন তাদের মাকে বন্দি করে রেখেছেন এবং সম্পত্তি নিজের নামে নেওয়ার জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিন মিনিটের ভিডিওটি হিসারের আজাদ নগরের মডার্ন সাকেত কলোনির। এতে দেখা যায়, রিতা নামের ওই নারী একটি বিছানায় বসে আছেন, আর পাশে তার মা নির্মলা দেবী কাঁদছেন। রিতা প্রথমে তার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, এরপর পায়ের ওপর সজোরে আঘাত করেন এবং ঊরুতে কামড়ে ধরেন, মায়ের আর্তনাদ উপেক্ষা করে। তিনি নির্মলা দেবীকে বলেন, ‘এটা বেশ মজা লাগছে, আমি তোমার রক্ত পান করব। মা কাঁদতে থাকলে রীতা তার চুল টেনে ধরেন, তাকে টেনে নিচে ফেলে দেন এবং আবার কামড় দেওয়ার চেষ্টা করেন, যদিও নির্মলা দেবী তখনো দয়া ভিক্ষা করছিলেন। এরপর তিনি তার মাকে থাপ্পড় মারেন এবং বলেন, ‘তুমি কি চিরকাল বেঁচে থাকবে?’
ভিডিওর পটভূমিতে এক পুরুষের আওয়াজও শোনা যায়, এরপর রিতা তার মাকে লাথি মেরে বিছানা থেকে ফেলে দেন, তাকে মারধর করেন এবং চিৎকার করতে থাকেন। ‘তুমি আমাকে বাধ্য করছ এটা করতে’ বলেন এবং আবার মারধর ও চুল টানাটানি শুরু করেন।
রিতার ভাই অমরদীপ সিং তার অভিযোগে জানান, তার বোন দুই বছর আগে রাজগড়ের কাছে একটি গ্রামে বসবাসকারী সঞ্জয় পুনিয়াকে বিয়ে করেছিলেন। তবে বিয়ের পরপরই তিনি বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন এবং তখন থেকেই মায়ের ওপর নির্যাতন শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, রিতা তার স্বামীকে নিয়েও মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন এবং সম্পত্তির জন্য মাকে হয়রানি করেন। রিতা কুরুক্ষেত্রের পারিবারিক সম্পত্তি ৬৫ লাখ রুপিতে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং মায়ের বাড়িটিও নিজের নামে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য তাকে বন্দি করে রেখেছেন।
অমরদীপ আরো দাবি করেছেন, রিতা তাকে বাড়িতে যেতে বাধা দিতেন এবং হুমকি দিতেন, তিনি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলবেন। আজাদনগর থানার ইন্সপেক্টর সাধুরাম জানান, রিতার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং অভিভাবক ও প্রবীণ নাগরিকদের ভরণপোষণ ও কল্যাণ আইন, ২০০৭ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।