
আমি ভেবেছিলাম নুতন সরকার আসলে ইতিহাসের সবকিছুই নিরপেক্ষভাবে স্বীকৃতি দেয়া হবে, যার যা অবদান আছে তা সঠিকভাবেই মুল্যায়ণ করা হবে। তা দেখতে পাচ্ছি না। আগের সরকার অনেক কিছু বলতো না, করতো না, তাতে রাজনৈতিক ক্রেডিট হাতছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়ে। বর্তমান সরকারেরতো এই ভয় থাকার কথা নয়। তাহলে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ নিয়ে কোন একটা কথা বা বিবৃতি নেই কেন? তাহলে কি ৭ই মার্চ বলে কোন দিন ১৯৭১ সালে ছিলই না? থাকলেও তেমন কিছুই ঘটেনি?
কিছুক্ষণ আগে প্রয়াত ব্যরিষ্টার মইনুল হোসেনের একটা পুরনো ভিডিও দেখছিলাম। অত্যন্ত সাহসী এই লোকটা সেদিন যা বলেছিলেন তাই ঘটে গেছে দেশে কিন্তু তিনি দেখে যেতে পারেন নি। তবে আজ বেঁচে থাকলে কি বলতেন জানি না। ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। অতীতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এখন কেন নিরপেক্ষভাবে ইতিহাসের সকল নায়কদেরকে সম্মান দেয়া হবে না, স্মরণ করা হবে না? ভাষানী, মুজিব, জিয়া সকল ন্যাশনাল হিরোদের যতটুকু সম্মান প্রাপ্য তা তাদের দেয়াটাই কি কর্তব্য নয়?
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছিলাম গোয়ালন্দের বাসায় রেডিওতে। তখন খুবই ছোট থাকলেও সেদিনকার উত্তাপ এখনো কিছুটা মনে পড়ে। আসলে বঙ্গবন্ধুর বলা সেই ঐতিহাসিক উক্তি, “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম” এখনো শেষ হয় নাই। মুক্তির সংগ্রামের একটা ধাপ হচ্ছে গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্হার খোল নালচে পাল্টে ফেলা। এই প্রসেসটার নামই সংস্কার। আজ এই ঐতিহাসিক দিনে আশা করি সেই কাংখিত সংস্কারের মুখ জাতি অচিরেই দেখতে পাবে। সংস্কারের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে একটা জবাবদিহিতার গনতান্ত্রিক সমাজ গঠিত হবে যেখানে যে যে দলই করুক, অপরাধ করলে শাস্তি আর ভাল কাজ করলে পুরস্কৃত করা হবে। সেই দিন কি আমরা দেখে যেতে পারবো?
স্কারবোরো, কানাডা