
শারমীন শিলা (ক্রিম আপা), যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক পরিচিত, সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন। তিনি মূলত তার সন্তানদের নিয়ে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। তবে, এখন এই ভিডিও কনটেন্টের কারণে তিনি প্রশাসনের নজরেও এসেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, শারমীন শিলা তার দেড় বছর বয়সী কন্যাশিশু এবং ১২ বছর বয়সী ছেলেকে ভিডিও কনটেন্টে ব্যবহার করে ‘ভিউ’ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ভিডিওগুলোতে শিশুটির চুলে রাসায়নিক প্রয়োগ, কানে ভারী দুল পরানো, খাবার কেড়ে নেওয়া এবং মাঝে মাঝে ধমকানো ও চড় মারার মতো আচরণ দেখা গেছে। এসব কন্টেন্টে শিশুটির মানসিক অত্যাচারের মতো চিত্র ফুটে উঠেছে, যা শিশু নির্যাতন হিসেবে গণ্য করা হতে পারে।
ভিডিওগুলোতে শারমীন শিলা দাবি করেছেন যে, তার এসব আচরণ নির্যাতন নয়, বরং ‘ভালোবাসা’র অংশ। কিন্তু অনেকের মতে, এসব আচরণ শিশুর বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং নৈতিকভাবে অনুচিত।
এদিকে, ‘একাই একশো’ নামক একটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে শারমীন শিলার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, এসব ভিডিওর মাধ্যমে শিশুর উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে এবং এ ধরনের কনটেন্ট তৈরি করার নীতি নিয়ে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাভারের ইউএনও মো. আবু বকর সরকার জানিয়েছেন, শারমীন শিলার কাছে তার আচরণ ও ভিডিওগুলো সম্পর্কে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। যদি তার ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হয়, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিশু সুরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বলেছেন, এসব ভিডিওতে স্পষ্টতই শিশুর প্রতি নির্যাতনের উপাদান রয়েছে। যদিও এটি সরাসরি নির্যাতন হিসেবে প্রমাণ করা কঠিন, তবুও এটি নৈতিকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং শিশুর বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এদিকে, শারমীন শিলা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং তিনি কোনওভাবে নির্যাতন করেননি। তবে, এর আগে তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে এবং ভিডিও পোস্ট করার পর সেগুলো মুছে ফেলা হয়েছিল।
এখন দেখা যাচ্ছে, প্রশাসন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের কনটেন্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা তৈরি করার প্রস্তাবও উঠেছে।