
শৈশব থেকেই তিনি যুদ্ধ, মৃত্যু, রক্তপাত, স্বজনহারানো কান্না দেখে অভ্যস্ত। ভয়ঙ্কর এক আবহের মধ্যে বেড়ে উঠতে উঠতে পরবর্তীকালে সেই দৃশ্য এবং ঘটনাগুলিকেই বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার কাজও নিয়ে ফেলেন বছর পঁচিশের তরুণী। তিনি ফতিমা হাসৌনা। গাজ়ার চিত্র সাংবাদিক। সম্প্রতি ইজ়রায়েলি বিমানহানায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার একের পর এক ছবি তুলে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন এই সাংবাদিক। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুকে সঙ্গী করে চলা ফতিমা জানতেন, আজ নয় তো কাল মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু থেমে থাকেননি তিনি। নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে ছুটে গিয়েছেন গাজ়ার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। কখনও ইজ়রায়েলি সেনার রক্তচক্ষুকে চ্যালেঞ্জ করে তুলে ধরেছেন কী ভাবে গাজ়ার বাসিন্দাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে।
মৃত্যুর কয়েক দিন আগেই ফতিমা সমাজমাধ্যমে একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমার যদি মৃত্যু হয়, তা যেন শুধু ব্রেকিং নিউজ়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। অথবা মৃতের তালিকায় নিছকই একটি সংখ্যা হয়ে না থাকে। আমি এমন মৃত্যু চাই যা গোটা বিশ্ব দেখবে। গোটা বিশ্বে যার প্রভাব পড়বে। যা শুধু সময় আর স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।’’
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বুধবার তাঁর সেই ‘ইচ্ছাপূরণ’ হয়েছে। ইজ়রায়েলি বিমান হামলায় উত্তর গাজ়ায় নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় সাংবাদিকের। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর বিয়ে। এই হামলায় ফতিমা এবং তাঁর পরিবারের দশ জন সদস্যের মৃত্যু হয়। এই হামলায় তাঁর অন্তঃসত্ত্বা বোনেরও মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হানা এবং তাঁর জীবনীর উপর একটি তথ্যচিত্র ফ্রান্সের ফিল্মোৎসব এবং কানের একটি ফিল্মোৎসবে দেখানো হবে বলে ফতিমার মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা আগে ঘোষণা করা হয়।