10.6 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৫

এমপিও হতে পারছেন না পলিয়েভ!

এমপিও হতে পারছেন না পলিয়েভ! - the Bengali Times
এই বারের নির্বাচন সাংঘাতিক হাড্ডাহাড্ডির লড়াই

পেয়ার পলিয়েভ। তিনি কানাডার রাজনীতির কনজারভেটিভ দলের নেতা সেই দুই হাজার দুই সাল থেকে। এর আগে তিনি দলগতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে নির্বাচনে  হেরেছেন দুই-দুইবার। এবার তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে লড়াই করা মোট তিনবার হচ্ছে।

এই বারের নির্বাচন সাংঘাতিক হাড্ডাহাড্ডির লড়াই। ভাগ্যের লীলাখেলার লড়াই। অত্যন্ত ড্রামেটিক মোড় ঘুরে যাওয়ার লড়াই। এ লড়াইয়ে হারা মানে পলিয়েভের রাজনৈতিক লাইফে সিংহভাগ ভাটা পড়বে।

- Advertisement -

তবে তিনি কিন্তু একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তাঁর রয়েছে বেশ জমজমাট রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। তিনি ছিলেন হারপার সরকারের হাউজিং মন্ত্রী। তিনি প্রথম এমপি হিসেবে ইলেক্টে হোন ২০০৪ সালে পঁচিশ বছর বয়সে। তবে তিনি কানাডার রাজনীতির রোডম্যাপ শুরু করেন মাত্র কুড়ি বছর বয়স থেকেই। এখন তিনি ৪৫ বছর।

তাঁর অতীত রাজনৈতিক জীবনে অনেক কিছু সমালোচনার ইতিহাস আছে।  আপনারা রির্সাচ করলে জানতে পারবেন। হারপারের আমলে যখন তিনি মন্ত্রী ছিলেন তখন residential school নিয়ে পলিয়েভ ভীষণভাবে একটা বিতর্কিত কমেন্ট করেন, যার জন্য হারপার House of Commons on June 12, 2008 তে ক্ষমা চান। এসব নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।

যাই হোক তাঁর রাজনৈতিক জীবন পঁচিশ বছরের। অনেক অভিজ্ঞতাও আছে।

তিনি এবার যে আসন থেকে নিজে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেটা হলো অটোয়ার কার্লেটন।

বড়োই পরিতাপের বিষয় যে, ভোটের পাঁচদিন আগে থেকেই বিভিন্ন সোর্স ও জরিপের মাধ্যমে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে যে তিনি লিবারেল প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচন না জিততে পেরে নিজের আসনটাও হারাতে বসেছেন। না জিততে পারলে তো ধরেন তিনি এমপিও হচ্ছেন না। সেটাই এখন সবচেয়ে বড়ো খবর এই সোমবারের নির্বাচনের রেজাল্টে।

আর যদি তিনি নিজেই জিততে না পারেন, তাহলে ধরেন এটা তাঁর ও দলের জন্য একেবারেই জঘন্যতম ঘটনা ঘটবে।

এদিকে অন্টারিওতেও তাঁর দল বেশি আসন পাচ্ছেন না বলেও জরিপে উঠে এসেছে।

পলিয়েভের নিজের দলের সঙ্গে সম্পর্ক:

পলিয়েভ অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ডকে ফোন করে বলেছিলেন, ফোর্ড যেন পলিয়েভের হয়ে একটু প্রচারণা চালান যেহেতু  ওনারা দুইজন একই দল করেন। ফোর্ড অন্টারিওর সরকার আর পলিয়েভ ফেডারেল সরকার হতে লড়ছেন।

তখন ফোর্ড কিন্তু পলিয়েভেকে এতটা স্বাগত জানান নি। মানে তিনি পলিয়েভের হয়ে প্রচারণা চালান নি। তারও একটা অতীত ইতিহাস আছে। পলিয়েভ যখন নেতা নির্বাচনের জন্য লড়ছিলেন ২০২২ সালে, তখন ফোর্ডের এক বন্ধুও লড়েছিলেন দলের নেতা হতে। পলিয়েভ ঐ বন্ধুকে পলিটিক্যালি ফাঁদে ফেলে কিক-আউট করে দেন বলে গুঞ্জন আছে। ফলে ফোর্ডের মনে এই নিয়ে একটা ক্ষোভও আছে। তাই পলিয়েভের নিয়ে তিনি এতটা মাথা ঘামান নি বলে কেউ কেউ মনে করেন।

এদিকে হয়েছে কি, গত দুই দিন আগে পলিয়েভ গিয়েছিলেন N.S মানে Nova Scotia তে। সেখানের প্রিমিয়ার হলেন টিম হাসটন যিনি কনজারভেটিভের দলের নেতা।

তো এই হাসটনের সঙ্গেও পলিয়েভের ভালো সম্পর্ক নেই। সেইজন্য পলিয়েভ যখন দুইদিন আগে ক্যাপেইনে গিয়েছিলেন N.S তে  টিম হাসটন পলিয়েভের সঙ্গে দেখাই করেন নি।

যাই হোক, পলিয়েভ এবার তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে লড়েছেন একেবারে সর্বোচ্চভাবে চেষ্টা করে।

কিন্তু কথা হলো, ধরেন দল যদি মেজোরিটি নিয়েও জিতত, আর যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনিই নিজের আসনে হারলেন, কেমন হবে ব্যাপারটা? বড়ো বিপর্যয় আরকি। যদিও কনজারভেটিভের জেতার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী।

পেয়ার পলিয়েভের সমস্যা হলো, তিনি বিরোধী দল বা কার্নিকে এ্যাটাক করেছেন খুব বেশি। বেশি উগ্রতা দেখিয়েছেন।

আমার পর্যালোচনায় মোট যে পাঁচজন নেতা দাঁড়িয়েছেন, তারমধ্যে পলিয়েভ, জগমিট সিং ও Bloc Quebecois Leader Yves-Francois Blanchet এই তিনজনই কিছুটা অনমনীয়। ভাষা ব্যবহার বা এ্যাটাকে ইনারা উগ্র।

কিন্তু কার্নিকে দেখবেন, তিনি অত্যন্ত ভদ্র, নমনীয় ও মার্জিত একজন মানুষ। তিনি কখনোই কাউকে দোষারোপ করে টানাটানি করেন নি।

একটা মজার ব্যাপার হলো কি জানেন? কার্নির গোটা জীবনে পলিটিক্যাল পারফরম্যান্স হলো মাত্র উনিশ দিনের মতো। আর তিনি যদি অভিজ্ঞ পলিয়েভকে পেছনে ফেলে মেজোরিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েই যান সেটাও কিন্তু কানাডার ইতিহাসের রেকর্ড ব্রেক।

তিনি অর্থনীতিবিদ ছিলেন। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে জনগণের আস্থা বেড়েছে।

দেখা যাক সোমবারে কী হয়!

আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।

 

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles