
আমি শান্তার কানের কাছে বারবার বলছিলাম ,
“ভয় পেয়ো না তুমি, কিচ্ছু হবে না… কিচ্ছু হবে না”
এই লাইনগুলো আমি যে ঠিক কতবার বলেছি, নিজেও জানিনা… কারণ আমিও একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছি।
গাড়িতেও আমি শান্তাকে শক্ত করে ধরে বসেছিলাম।
ড্রাইভারের ডাকে আমার ঘোর কাটলো ,
“ভাইজান …হাসপাতালে চলে আসছি, নামেন আপনি ভাবীরে নিয়া ।”
গাড়ি থেকেই দেখতে পেলাম, বড় আপা আর দুলাভাই দাঁড়িয়ে আছে হাসপাতালের সামনে।আমাদের আগেই পৌঁছে গেছে তারা।
বড় আপা ,দুলাভাই শান্তাকে ভীষণ স্নেহ করে… ওদেরকে সম্ভবত আব্বা ফোন করে সব জানিয়েছে। বাসা থেকে বের হবার সময় আব্বাকে খুব অসহায় লাগছিল। একবার আমাদের কাছে আসছিলেন, আরেকবার আম্মার কাছে যাচ্ছিলেন… দোয়া পড়ছিলেন আস্তে আস্তে।
বড়আপা আর দুলাভাইকে দেখে খুব শান্তি লাগছিল। ওরা দুজনই খুব কাজের।সব পরিবারেই মনে হয় এরকম একজোড়া আপা দুলাভাই থাকে, যারা সবসময় সবকিছু সুন্দরভাবে ম্যানেজ করতে পারে। এই হাসপাতালে আমরা নিয়মিত আসি, দুলাভাইয়ের বেশ কয়েকজন ডাক্তার বন্ধু আছেন এখানে। শান্তার গাইনী ডাক্তারও দুলাভাইয়ের পরিচিত।
শান্তার অনুমানই ঠিক , তার শরীরে নতুন প্রাণের অস্তিত্ব ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছে। পড়ে গিয়ে বড় কোনো বিপদ না হলেও, বিপদের আশঙ্কা এখনো রয়েছে ।রাতটা হাসপাতালে থাকতে পরামর্শ দিল ডাক্তার। এছাড়া পরবর্তী সাতদিন কমপ্লিট বেড রেস্টে থাকতে হবে।
আমাকে শান্তার পাশে বসিয়ে, হাসপাতালে এদিক-ওদিক ছোটাছুটির কাজগুলো বড় আপা আর দুলাভাই করল।
হাসপাতালে শান্তার পাশে বসে থেকে আমার মনে হচ্ছে, অতি সুখে বেড়ে উঠলে মানুষের সাংসারিক বুদ্ধি খোলে না। জীবনে দুঃখ ,ঝামেলা ,সমস্যা এগুলোর প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে সমস্যার সমাধান করাটা শেখা হয়ে যায়। আমি অতিরিক্ত আদর-আহ্লাদে বড় হয়েছি।তাই পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মত ক্ষমতা আমার তৈরি হয়নি। আপারা আমার মত এত আদরে বড় হয়নি, তাদের সবারই বুদ্ধি আমার থেকে বেশি ।বিশেষ করে বড়আপা ভীষণ বুদ্ধিমতী। বড়আপা বললো ,
“হাসপাতাল থেকে আমার বাসাটা বেশি কাছে। কালকে বরং শান্তাকে আমার বাসায় নিয়ে যাই ।একসপ্তাহ তো ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বলেছে। তুই ফোন করে আম্মাকে খবরটা জানিয়ে দে। এত বড় একটা খুশির খবর তোর মুখ থেকে শুনলেই আম্মা বেশি খুশি হবে। আব্বাকেও ফোন দিয়ে একটু কথা বল, খুব টেনশন করছে সবকিছু নিয়ে। জানিস তো, আব্বার শরীরটা ভালো না।”
বড়আপা যেন একদম আমার মনের কথাটা পড়তে পেরেছে। আমি নিজেও চাচ্ছিলাম না শান্তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে, এদিকে অন্য কোথাও যদি এ অবস্থায় শান্তাকে নিয়ে উঠি তাহলে বিষয়টা জানাজানি হবে। এতসব ঘটনা শান্তার আব্বা-আম্মা শুনলে, কি যে হবে… ভেবেই অস্থির অস্থির লাগছে।
ফোনটা হাতে নিয়ে, আম্মাকে ফোন দিতে গিয়েও দিলাম না। মনে হল, এই মুহূর্তে আম্মার সাথে কথা না বলাই ভালো হবে। আব্বাকেও ফোন দিতে গিয়ে কেটে দিলাম, সারাদিন আব্বাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে ছিলাম…আমারই এতো টায়ার্ড লাগছে… আব্বার তো নির্ঘাত শরীর খারাপ লাগছে, একটু পরেই সকাল হয়ে যাবে, আমরা বাসা থেকে বের হয়েছি যে অনেকটা সময় হয়েছে…আব্বার হয়তো চোখ লেগে যেতে পারে।
আমি আব্বাকে একটা টেক্সট দিলাম, “সবকিছু ঠিক আছে” লিখে। সকাল হলে ফোন দিয়ে সবকিছু জানাবো ভেবে।
সকালে আব্বার সাথে কথা বললাম। যদিও খুব অস্বস্তি হচ্ছিল বলতে, তবু জানিয়ে দিলাম ,”হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর শান্তাকে নিয়ে বড় আপার বাসায় কিছুদিন থাকব।”
শান্তার মা হবার খবরে, আব্বা ভীষণ খুশি হলেন। তবে, শান্তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি না শুনে একটু মন খারাপ করলেন। অবশ্য মুখে কিছুই বললেন না, বুঝতে পারলাম আম্মা পাশেই রয়েছে। আব্বা বললেন, যা ভালো বুঝি সেটাই যেন করি।
দুইদিন পর…
শান্তাকে নিয়ে গতকাল রাতে বড় আপার বাসায় এসেছি। অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছি।এই কয়েকটা দিন শুধুই শান্তাকে সময় দিবো। আমাদের প্রথম সন্তান , এরমধ্যে এতো কিছু … শান্তার ভয় কাটছে না।
এই দু’দিনে আম্মার সাথে একবারও কথা হয়নি আমার।বড় আপা বেশ অনেকবার ফোন করেছিল, কিন্তু প্রতিবারই আব্বা কথা বলেছেন… আম্মা কথা বলতে চাননা।
শান্তা ফোন করেছিল আম্মাকে, ওর ফোনটাই শুধু আম্মা ধরেছেন।যদিও খুব অল্পসময়ই কথা হয়েছে… আম্মা বলেছেন ,শান্তার মা হবার খবরে খুব খুশি হয়েছেন। তিনি প্রান ভরে দোয়া করছেন আমাদের জন্য।
তবে, বাড়ি ফিরার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। আমার কথাও জিগ্যেস করেননি।
আমারো বেশ অভিমান হলো মনে মনে। এতো বড় একটা খবর শোনার পর, আশা করেছিলাম আম্মা আসবেন বড় আপার বাসায়। আমি ফোন করিনি বলেই কি, আম্মা এলেন না?
জানি আম্মা খুব কষ্ট পাচ্ছেন। আমি নিজেও শান্তি পাচ্ছিলাম না, তবে যতবারই বাড়ি ফিরার কথা ভাবি, ততবারই শান্তার প্রতি আম্মার অস্বাভাবিক আচরণগুলো মনে পড়ে যায়।
বড় আপা আর দুলাভাই অবশ্য বলছে, এতো বড় সুখবর… এখন আর আম্মা কিছুতেই শান্তার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না। তাই এক্ষুনি যেন আমি আলাদা বাসা নেবার কথা না ভাবি। দরকার হলে বড় আপা কথা বলবে আম্মার সাথে।
শান্তাও একইকথা বলছে,ও বাড়ি যেতে চায়।
শান্তা বলছে, আম্মা ওকে ধাক্কা দেয়নি।সরে যেতে বলেছিল…ওর শরীর দূর্বল ছিল,তাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেছে সে।
হাজারটা ভাবনা মনের মধ্যে নিয়ে, ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। খুব বাজে একটা স্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙে গেল।
দেখলাম,
” মাছ ধরার প্রকাণ্ড এক জালের মধ্যে, আম্মা আটকে আছেন। ঠিক মাছের মতো ছটফট করছে আম্মা। চোখদুটো খুব অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি আম্মাকে বের করে আনতে পারছি না।”
লাফ দিয়ে উঠে বসলাম,
বাইরে ফজরের আজান হচ্ছে। আমার পরনের জামাটা ঘামে ভিজে গেছে, স্বপ্ন দেখে।
সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে, ঠান্ডা একটা শাওয়ার নিয়ে, মসজিদের যাবার জন্য তৈরি হয়ে নিলাম। মনে হলো,নামাজ পড়েই আম্মার সাথে দেখা করে আসবো। ডাক্তারের পরামর্শ মতো আর চারদিন এখানে থেকে, তারপর বাড়ি ফিরবো…সেটা আম্মাকে জানিয়ে আসবো।
মসজিদ থেকে বের হয়ে, আম্মার পছন্দের রেস্টুরেন্ট থেকে পরোটা আর গরুর মাংসের কালাভুনা ,সাথে রসগোল্লা নিলাম।এটা আম্মার খুব পছন্দের নাস্তা। মর্জিনা খালাকে ফোন দিলাম, নাস্তা যেন না বানায়, সেটা জানানোর জন্য। কিন্তু কয়েকবার ফোন করেও খালাকে পেলাম না।
বাসায় গিয়ে,সকাল সকাল মেইন গেট খোলা পেলাম। আব্বা এই সময়ে মসজিদে গেলেও গেট তালা দেওয়াই থাকে সবসময়। দারোয়ান বা ড্রাইভার কেউই নিচে নেই। স্বপ্নটা দেখার পর থেকেই মনটা অদ্ভুত রকমের অস্হির লাগছিল। অস্থিরতাটা আরো বেড়ে গেল বাসার নিচে এসে…
আমি দৌড়ে সোজা উপরে উঠে গেলাম,
দরজা খোলা…বাইরে থেকে মর্জিনা খালার ছেলেটার কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, ছেলেটার কি কিছু হলো?
ঘরে ঢুকে দেখি,সবাই আম্মার ঘরে ভীড় করে আছে, ডাক্তারও আছে একজন।
মর্জিনা খালা আমাকে দেখে চিৎকার করে উঠল,
আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
সবাই বলাবলি করছে, ঘুমের মধ্যেই চলে গেছেন আম্মা।কেউ কিছু বুঝতেও পারেনি।
আমার পৃথিবীটা দুলে উঠলো। বুকের মধ্যে ধড়াস ধড়াস করছে। চোখের সামনে ভেসে উঠছে, জালের মধ্যে আটকে থাকা আম্মার শরীরটা, আম্মার চোখদুটো।
কাউকে কিছু বুঝতে দেয়নি আম্মা, শুধু তার প্রানটা শেষ সময়ে আমার কাছে এসেছিলো… আমার ঘুমের মধ্যে।
আম্মার প্রাণহীন শরীরটা বিছানায় পড়ে আছে। পাশের চেয়ারে আব্বা চোখ বন্ধ করে বসে দোয়া পড়ছেন । আব্বার গাল বেয়ে পড়তে থাকা পানি ,মুছতে চেষ্টাও করছেন না।
আমি গিয়ে বিছানায় বসা মাত্র, আব্বা চোখ খুলে তাকালেন।
“তোমাকে কে ফোন করেছে? মর্জিনা?”
আমি বললাম, “না আব্বা। আম্মা নিজেই আমাকে বলে গেছেন।”
আব্বা সম্ভবত আমার কথা বুঝতে পারলেন না। বললেন,
“সবাইকে ফোন করে খবর দাও।”
“আমি কিছুক্ষণ আম্মাকে জড়িয়ে ধরে রাখি, আব্বা ? তারপর সবাইকে ফোন দেই?”
আব্বা আমার কথার জবাব না দিয়ে, আবারো চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়তে শুরু করলেন।
এক সপ্তাহ পর…
এতো বড় বিপর্যয় আমাদের পরিবারের জন্য অপেক্ষা করছিল, কে জানতো? আব্বা, আমি এবং শান্তা, তিনজনকেই হাসপাতালে নিতে হয়েছিল। আমরা কেউ মেনে নিতে পারছিনা, আম্মার এভাবে চলে যাওয়াটা।
প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর অনেকটা সময় আম্মার খাটে বসে থাকি আমি। আমার সাথে বাসার আরো অনেকেই বসে থাকে। বাকি দুই বোনও এসেছে দেশে।
আজকে, আম্মার ঘরের টেবিলের ড্রয়ারে একটা চিঠি পেলাম।কেন যেন, হঠাৎ করে ড্রয়ারটা খুলেছিলাম আমি। চিঠিটা আম্মা লিখেছে শান্তাকে।যেদিন শান্তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম, সেদিনের তারিখ দেয়া। আমি চিঠিটা নিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম।
আম্মার লেখা চিঠিটা আমার চোখের সামনে, কিন্তু আমি লেখাগুলো পড়তে পারছি না ।ঝাপসা লাগছে। চশমাটা খুলে কয়েকবার কাঁচ দুটো পরিষ্কার করলাম, তবুও আমার দৃষ্টি ঝাপসা লাগছে। চিঠিটা হাতে নিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকে,চোখেমুখে পানি ঝাপটা দিলাম। তারপর বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রইলাম। মনে হচ্ছে, আমার ঘরটা… বিছানাটা… কেমন যেন দুলছে।
উঠে কয়েক চুমুক পানি খেয়ে, তারপর চিঠিটা আবার চোখের সামনে মেলে ধরলাম।
আম্মা প্রথমে প্রিয় শান্তা লিখেছিলেন , সম্বোধনে। তারপর সেটা কেটে নিচে লিখেছেন শুধুই “শান্তা” ।
শান্তা,
তোমাকে “প্রিয় শান্তা” লিখতে পারলাম না ।প্রিয় লিখলে অসততা হবে। তুমি আমার প্রিয় নও ।তবে ,এতে তোমার কোন দায় নেই …এই দায় একান্তই আমার, এক স্বার্থপর মায়ের।
বাবুর বউ না হয়ে, অন্য যেকোন আলাদা মানুষ হলে তুমি আমার প্রিয়ই হতে, এতে কোন সন্দেহ নেই ।কারণ তুমি বড় বেশি ভালো মেয়ে। তুমি এত বেশি ভালো যে, তোমার সামনে অন্য কারো ভালো ম্লান হয়ে যায়। এত ভালো যে, বাবুকে জয় করে নিয়েছো, বাবুর হৃদয়ের সবটুকু দখল করে নিয়েছো তুমি ।
সারাজীবন অন্ধের মত, নিষ্ঠুরের মতো ,স্বার্থপরের মত ভালোবেসেছি বাবুকে। ওর ভালোবাসা আর স্নেহের ভাগ কাউকে দেইনি কখনো। দিতে পারিনি আমি।
জানো শান্তা, বাবুকে আলাদা করে এখন আর ভালোবাসা যায়না, তোমাকেও ভাগ দিতে হয়…কারন তুমি তার সাথে মিশে গেছো।কিন্তু আমি যা পারিনা তা কিভাবে করবো, বলতে পারো? তোমাকে যে ভালোবাসে না,বাবু তাকে ঘৃণা করে। আমার জন্য বাবুর চোখে ঘৃনা দেখেছি।
আজ নিজেকে খুব নিঃস্ব ,একেবারে শূন্য লাগছে। আমার ভালোবাসা, আমার স্নেহ, প্রত্যাখ্যান করে দিচ্ছে ছেলেটা।ওকে ভালোবাসার জন্যই তো বেঁচে থেকেছি আমি। সেটা যদি বন্ধ হয়ে যায়, আমার আর কি থাকে বলতো?
নিজের মৃত্যু কখনো চাইতে হয় না, তবু মনে হচ্ছে এভাবে বেঁচে থাকতে চাই না আমি।
আজ স্বীকার করতে বাধা নেই, তোমার কাছে আমি হেরে গেছি। সবসময় ভেবেছি, আমার চেয়ে বেশি কেউ বাবুকে ভালোবাসতে পারবেনা। তুমি আমাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছো। বাবুকে তুমি আমার চেয়ে বেশি ভালোবেসেছো,তাই আমার সব অন্যায় আচরণ তুমি চুপচাপ মেনে নিয়েছো, বাবুর কথা ভেবে। আমি কিন্তু সেটা পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দিও।
ইতি
এক স্বার্থপর মা (আজই বাবু আমাকে এই নামে ডাকলো।তুমি ওকে বলো, আমি তোমাকে ধাক্কা দেইনি)
এতদিন গুমড়ে গুমড়ে কেঁদেছি আমি। আম্মার চিঠিটা পড়ে হাউমাউ করে কাঁদলাম। সবকিছু একটু একটু করে পরিষ্কার হয়ে যাচছিলো।আম্মা এবং শান্তার সম্পর্ক এই জায়গায় এসে দাঁড়ানোর জন্য,আমিই দায়ী। শান্তার সাথে বিয়ের পর আমি আম্মাকে অবহেলা করেছি। আম্মাকে আরেকটু সময় দিলে, আরেকটু আগলে রাখলে হয়তো সবকিছু অন্যরকম হতো।
স্ত্রী এবং মা…এই দু’জনের মধ্যে ব্যালেন্স করতে পারিনি।এই অক্ষমতার জন্য সৃষ্টিকর্তা কি আমাকে ক্ষমা করবেন?
চিঠিটা ছিড়ে ফেললাম গোপনে, শান্তা সহ্য করতে পারবে না।
আট মাস পর…
একটু আগে একটা ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দিয়েছে, শান্তা। আমাদের মেয়েটা দেখতে অবিকল আম্মার মত।
আম্মার নামেই মেয়ের নাম রেখেছি, “শিমুল”।
শিমুলকে কোলে জড়িয়ে ধরে পরিবারের সবাই কাঁদছি।
হাসপাতাল ভর্তি লোকজন সবাই অবাক হয়ে দেখছে,এক নবজাতক শিশুকে জড়িয়ে ধরে, একটা গোটা পরিবার হাউমাউ করে কাঁদছে।কেউ জানে না, আম্মা তার প্রান ভোমরার কাছে, প্রান ভোমরা হয়ে ফেরত এসেছে।