
কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় অন্টারিওর হুইটবিতে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি করতে চায় মার্ক। এজন্য একটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে তারা। এর মধ্য দিয়ে কানাডার সামনে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় যুগান্তকারী অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ উৎপাদনের হাব হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
মলনুপিরাভির নামে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি উৎপাদনে থার্মো ফিশার সায়েন্টিফিকের সঙ্গে চুক্তি করেছে মার্ক। স্থানীয়ভাবে সরবরাহের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে রপ্তানির লক্ষ্যে কোম্পানির হুইটবি কারখানায় ওষুধটি উৎপাদন করতে চায় তারা।
হাসাপাতালের বাইরে থাকা কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধটি হেলথ কানাডার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সবুজ সংকেত পেলে কারখানাটিতে ১ কোটি ডোজ মলনুপিরাভির উৎপাদন করা হবে।
ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী ফিলোমেনা ট্যাসি গত সপ্তাহে জানান, মুখে সেবনের ৫ লাখ ডোজ অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ক্রয়ে চুক্তি করেছে কানাডা। হেলথ কানাডা অনুমোদন দিলে আরও ৫ লাখ ডোজ কেনা হবে।
মার্ক কানাডার প্রেসিডেন্ট মারওয়ান একার সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ আছে। অনুমোদন পেলেই তা জাহাজীকরণ করা হবে। তবে ভবিষ্যৎ সরবরাহের লক্ষ্যে আমরা উৎপাদন চালিয়ে যাবো।
ভাইরাল রেপিলকেশনের জন্য আবশ্যক এনজাইম বন্ধ করে কোভিড-১৯ রোগীদের সুস্থতায় কাজ করে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি। মার্কের প্রাথমিক ট্রায়ালে প্রমাণিত হয়েছে যে, ওষুধটি কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ৫০ শতাংশ হ্রাস করে।
অনেকেই ওষুধটি কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন। বর্তমানে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ কেবল শিরার মাধ্যমে দেওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরই কেবল দেওয়া হয় ওষুধটি। কিন্তু মুখে সেবনের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি বাড়িতে ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবেন চিকিৎসক।
এদিকে নতুন এ ঘোষণা কোভিড-১৯ ও ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবেলায় কানাডার নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তোলার যে উদ্যোগ তাকেও এক ধাপ এগিয়ে দেবে। কানাডার উদ্ভাবন বিষয়ক মন্ত্রী ফ্রাসোয়াঁ ফিলিপে শ্যাম্পেইন বলেন, কানাডায় আমরা কিভাবে বায়োম্যানুফ্যাকচারিং খাত গড়ে তুলবো সেক্ষেত্রে এটি খুবই বড় পদক্ষেপ।
১৯৮০ সাল থেকেই কানাডার ওষুধ উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অতি জরুরি ভ্যাকসিন ও ওষুধের জোগানও স্থানীয়ভাবে দিতে পারেনি কানাডা। সরবরাহের জন্য বিদেশের ওপর এই নির্ভরতার কারণে সরবরাহজনিত বিলম্বের কারণে কানাডার ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম থমকে গিয়েছিল। এরপর কানাডা তাদের হারিয়ে যাওয়া বায়োম্যানুফ্যাকচারিং খাত পুনরুজ্জীবনে কৌশল ঘোষণা করেছে।