
আমি খুব আবেগপ্রবণ মানুষ। বাংলাদেশের যে কোন সাফল্যে আনন্দাশ্রুতে দু’চোখ ভিজে যায়। জলের ধারায় ভেসে যাই। আবার ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ি। ভীষন কস্ট পাই।
কখনো মানুষের সামান্য ভালবাসার গল্পে আনন্দিত হই। ভাল একটি বই পড়ে মুগ্ধতায় যেমন বুঁদ হই, তেমনি সিনেমার কোন আবেগঘন দৃশ্য আমার ভেতরে ভেতরে ভাংচুর হয়। স্তব্ধ হয়ে থাকি।
তুচ্ছ অনেক বিষয় আছে আমাকে আবেগাক্রান্ত করে। ধরুন, কেউ একজন মাথায় হাত বুলিয়ে তার জুনিয়র কাউকে পরম মমতায় বুকে টেনে তার সাফল্যে আর্শীবাদ করছেন, এমন দৃশ্য আমার হ্রদয় ছুঁয়ে যায়। কিংবা ট্রেনস্টেশনে কেউ একজন প্রিয়জনকে বিদায় জানাতে এসে ট্রেনটি চোখের আড়াল না হওয়া অবধি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন, অথবা দীর্ঘদিন পর কোন স্টেশনে প্রিয়জনের আগমন ও মিলনের দৃশ্যের আবেগময় যে পরিবেশের সৃষ্টি হয়, এসব দৃশ্যকল্প আমাকে অদ্ভুত আবেগে ভাসিয়ে নেয়। কিছু সময়ের জন্য অন্যমনস্ক আমি নিজের মধ্যে থাকি না। ভিনগ্রহের মানুষ হয়ে যাই! চোখ দু’টো ছল ছল করে, পারিপার্শ্বিকতা ভুলে ভেসে ভেসে যাই দূরে…বহুদূর।
অনাবাসী জীবনে এমন কোন দিনের সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাত নেই দেশের গান শুনিনি বা শুনি না। হয়ত সেই গানের লিরিকের দু’টো লাইন প্রচন্ড নাড়া দিয়ে আমায় হু হু করে কাঁদিয়ে ছেড়েছে। মেট্রো , বাস , কর্মস্থল কিংবা বাসায় এরকম গান শুনে কত শত সহস্রবার ভিজেছি চোখের জলে, সত্যি বলতে কাউকে সেই জল দেখতে দিতে চাইনি বলে লুকানোর চেস্টা ছিল আপ্রাণ।
বুধবার সাফ ফুটবল টুর্নামেন্টে ভারতের সাথে বাংলাদেশের মেয়েদের দুর্দান্ত ছন্দময় খেলার হাইলাইটস দেখে বারবার আবেগে শিউরে শিউরে উঠেছি, গোলের পর তাদের উল্লাসে ভেসেছি আনন্দাশ্রুতে। এমন জয়, আমাদের আনন্দাশ্রু তাদেরই প্রাপ্য।আমাদের ভালবাসা, স্নেহ সবই এই সোনার টুকরো মেয়েদের জন্য। আবারো অভিনন্দন।