selective focus photography of wheat grass during daytime

জন্মভূমি তত বেশি বড় হতে থাকে

আকতার হোসেন

আমি যত দূরে যাই, আমার জন্মভূমি তত বেশি বড় হতে থাকে”

একযুগ আগেও নতুন বছর যতোটুকু আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে বরণ করতাম এখন তেমনটা করতে ভয় পাই। মনে হয় যদি নতুন বছরের মন্থকূপে পড়ে যাই। মানসিক এই পরিবর্তনের কারণ হয়তো বয়স। হয়তো কিছুটা সময় এখনো বাকী আছে, হয়তো বা নেই। তাই প্রবাস জীবনে যাদের মধ্যে দেখেছি জন্মভূমির ছায়া। যাদের উপস্থিতিকে মনে করেছি বাংলাদেশ। যারা পাশে থেকে চলেছেন কিছুটা পথ তারাই আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ। কবি রাজু আলাউদ্দিনের কবিতা ‘তুমি আমার পৃথিবী’ আমাকে ভীষণভাবে দোলা দেয়। কবির সেই কবিতার বিশেষ দুটি লাইন দিয়ে বছরের শেষ পোস্ট লেখা শুরু করেছি। জন্মভূমি থেকে বহু দূরে এই প্রবাসে যাদের পাশে কিছুটা সময় দাঁড়াতে পেরেছি তাঁদের স্মৃতি মাখা ছবিগুলো পাবার জন্য গতকাল থেকে উল্টে যাচ্ছি স্মৃতির এ্যালবাম। সামান্য কিছু ছবি খুঁজে পেলাম। যাদের ছবি এখানে থাকার কথা অথচ নেই তারা ক্ষমা করে দেবেন। হয়তো পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এখনো কোন ছবি তোলা হয় নি। অথবা আরও একটু খানাতল্লাসী করতে পারলে হয়তো পেয়ে যেতাম বাকি সব। কিংবা আছে হয়তো কোন সিন্দুকে যার চাবি আমি হারিয়ে ফেলেছি অনেক আগে। তাই বিলম্ব না করে সহজলভ্য কিছু ছবি দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই সেইসব মানুষদের, যাদের দেখেছি দু’ নয়ন ভরে শুধু দেশ দেশ করে। বিশেষ এক কারণে এখানে গ্রুপ ছবি বা দুইয়ের অধিক ব্যক্তির উপস্থিতির ছবিগুলো অন্তর্ভুক্ত করলাম না (শুধু ব্যতিক্রম আমার পরিবারের শেষ দুটি ছবি)। সেগুলো নিয়ে বেঁচে থাকা সাপেক্ষে হয়তো অন্য একটি নিবেদন জানাবো। বলা তো যায় না কখন কি যে হয়ে যায়, স্বভাবতই ভয় হয়। তাই স্বতন্ত্রভাবে আজ কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি, জন্মভূমি থেকে দূরে আছি এমনটা মনে না হবার যথেষ্ট অভয় যাদের কাছ থেকে পেয়েছি তাঁদের। অথবা যাদের সংস্পর্শ “আমি যত দূরে যাই, আমার জন্মভূমি তত বেশি বড় হতে থাকে” সেরকম উপলব্ধি দিতে পেরেছে তাদেরকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ। আগামী বছর ভালো হোক সবার। কেউ যেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ না করে চলে যায় ২০২৪ সালে এই হোক নতুন বছর বরণ করার আমার কাম্য বাক্য।

 

000000000000000000000000

রাজনীতিতে ভাল পরিবার

আব্দুল হালিম মিয়া

এক সময়ে রাজনীতিতে ভাল পরিবারের লোকেরা নেতৃত্ব দিতেন। রাজবাডী় জেলা আওয়ামী লীগের কথা এলে আমার মানসপটে তিনজন ব্যক্তিত্বের কথা ভেসে উঠে তারা হলেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত সাবেক এমপিএ মরহুম কাজী হেদায়েত হোসেন, ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত সাবেক এমপি মরহুম ডাঃ এস এ মালেক এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত বাকশাল সিস্টেমে রাজবাড়ীর জেলা গভর্নর মরহুম এ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরীর কথা। পাংশার জনাব মোসলেম মৃধার কথা অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো দেখা হয় নি। তবে পাংশার মরহুম এ্যাডভোকেট এবিএম নুরুল ইসলাম ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হয়ে গোয়ালন্দে এলে আমার এক মামা আমাকে কোলে তুলে ধরে তাঁর গলায় মালা দিতে সাহায্য করেছিলেন। তখন আমি ক্লাস থ্রির ছাত্র। যাইহোক যতদুর মনে পড়ে মরহুম এ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রাজবাড়ীর অ্যাডভোকেট বাসার যিনি বাসার উকিল নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন উনারা আব্বার বন্ধু ছিলেন, সম্ভবত ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের সমসাময়িক ছাত্র ছিলেন। ওয়াজেদ চৌধুরী চাচা দীর্ঘদিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে রাজবাড়ী গোয়ালন্দ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি যখন এমপি হন, তখন আমি গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম এবং সেই সময়ে সকল এমপিকে উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। ফলে ওয়াজেদ চৌধুরী চাচা মাঝে মাঝে আমার সময়ে উপজেলা পরিষদে আসতেন। সেই সময় গোয়ালন্দ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন হাজী আব্দুল লতিফ চাচা। মরহুম ইনতাজ মুন্সি, মরহুম ডাঃ জয়নাল আবেদীন থানা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন। এছাড়া ১৯৯০ সালে আমার নির্বাচনে চৌধুরী পরিবারের একটা বড় অংশ আমাকে সমর্থন করেছিলেন যা এখনো কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। সেই ঐতিহ্য এখন আর মান্য করা হয় না। তবে ওয়াজেদ চৌধুরী চাচার সুযোগ্য কন্যা সালমা চৌধুরী রুমাকে রাজবাড়ীর সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি মনোনীত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভবত সেই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। গত ১৯শে ডিসেম্বর একান্তই এক সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলাম মাননীয় এমপি সালমা চৌধুরী রুমার সাথে দেখা করতে। সাথে ছিলেন রাজবাড়ী সরকারী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ফকীর মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এবং আমার সময়ে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের সাবেক সদস্য জনাবা নুরজাহান চৌধুরী। একেবারেই আকস্মিক এই সাক্ষাতেও এমপি মহোদয়ার আতিথেয়তার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।

May be an image of 4 people, people smiling and dais

আকস্মিক এই সাক্ষাতেও এমপি মহোদয়ার আতিথেয়তার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ

0000000000000000000000000000000000000000000000000

অচেনা যাত্রী

সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল

রোববার টিম হর্টন কফি শপে চমৎকার একটি বিকেল কাটিয়ে সন্ধ্যায় ৫০৬ স্ট্রিটকারে মানিব্যাগ খুইয়ে ঘরে ফেরি।  সারা শরীর তদন্ত করে মানিব্যাগ না পেয়ে মাথায় বজ্রপাত ঘটে। দ্রুত ফিরে যাই মেইন স্ট্রিট সাবওয়ে স্টেশনে। স্ট্রিটকারের এক ড্রাইভারকে বললাম ঘটনাটা। তিনি জানালেন, স্ট্রিটকারে তিনি অভ্যন্তরীণ ভাবে ঘোষণা দিবেন। তারপর পরের  স্ট্রিটকারের এক তরুণী ড্রাইভারকে বললাম। তিনি বললনে, আমি ঘোষণা শুনেছি। তুমি বে স্ট্রিটের Loss and Found খোঁজ নিও।

[আমি যখন  TTC-তে কাজ করতাম, তখন আমি স্বর্ণালংকার, পাসপোর্ট, ডলার, মানিব্যাগ পেয়ে অনেক বার জমা দিয়েছি। আমি নিজেই সব ব্যাংককার্ড, হেলথ কার্ড, টিটিসি পাশ, আইডি সব হারিয়ে দিশেহারা!  প্রতি শীতে হাতমোজা হারাই, কানটুপি হারাই, চশমা হারাই, মাফলার, এমন কি আইফোনসহ সব হারিয়ে এসে বউয়ের বকা খাই। নিজেকে শান্তনা দিয়ে বউকে বলি, এতো কিছু হারাই। কিন্তু কক্ষনোই পা-মোজা হারাইনি।]

যাইহোক। হতাশ হয়ে টিকিট কাউন্টারের কর্তব্যরত ভাদ্র মহিলাকে বললাম, তোমার কাছে মানিব্যাগটা এলে আমার একটা কল দিও, প্লিজ।

তাকে সেল নম্বর দিয়ে চলে এলাম। বাসায় ফেরার জন্য কুড়ি নম্বর বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। তখনই ফোন এলো। কথা বলতে বলতে তিনি আমাকে দেখে হাত উঁচু করে ডাকলেন এবং কাউন্টার থেকে বেরিয়ে এসে হাসি মুখে মানিব্যাগটা ফেরৎ। এই মাত্র তার কাউন্টারে এক যাত্রী দিয়ে দ্রুত চলে গেছে।

May be an image of leather wallet and text

বাসায় ফেরার জন্য কুড়ি নম্বর বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। তখনই ফোন এলো। কথা বলতে বলতে তিনি আমাকে দেখে হাত উঁচু করে ডাকলেন এবং কাউন্টার থেকে বেরিয়ে এসে হাসি মুখে মানিব্যাগটা ফেরৎ